নতুন বছরে ভাঙল বহু ভারতীয়ের ‘আমেরিকান ড্রিম’। ওয়ার্ক এবং ইমিগ্রান্ট ভিসায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে আরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভিসা বাতিলের সপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে ঘোষণাপত্রে ট্রাম্প জানান, মার্কিন অর্থনীতিতে বিস্তর প্রভাব ফেলেছে করোনা মহামারী। আমেরিকায় জুন মাস থেকেই কোভিড–১৯ জেরে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহামারীর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে কাজের পরিস্থিতিতে, বেকারত্ব বেড়েছে। এই মারণ রোগে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছে শ্রমিক বাজার এবং দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। তাই দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এইচওয়ান–বি ভিসা–সহ অন্যান্য ওয়ার্ক ভিসা দেওয়া এমনিতেই বন্ধ ছিল। এবার তা আরও তিন মাস বাড়িয়ে দেওয়া হল। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ভারতীয় কর্মীদের সেদেশে নিয়ে যায় এইচওয়ান–বি ভিসা দিয়ে। আগামী তিন মাস সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল। ট্রাম্প আরও জানান, এইচওয়ান–বি ভিসা–সহ ওয়ার্ক এবং ইমিগ্রান্ট ভিসায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বর্তমান পরিস্থিতির চাহিদা মেনেই নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তা আরও বাড়ানো হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ধরাশায়ী হলেও মার্কিন আইন মেনে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত সীমিত ক্ষমতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন ট্রাম্প। বর্তমানে নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী জো বিডেনের দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পালা চলছে। ফলে এখনও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভিসা জারিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষমতা রয়েছে ট্রাম্পের হাতে।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি এক বিবৃতিতে জানান, দেশের সামগ্রিক পদ্ধতির কথা মাথায় রেখেই এক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কারণ করোনা দেশের কাজের বাজারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ওপরেও তার প্রভাব পড়েছে। বেকারি বেড়েছে হুহু করে। করোনার কারণে দেশে গত এপ্রিলেই বেকারির হার বেড়েছিল ৬.৭ শতাংশ। মার্কিন সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা। নতুন বছরে বহু ভারতীয়ের আমেরিকায় গিয়ে ভবিষ্যতে গ্রিন কার্ড পাওয়ার স্বপ্নও তার ফলে আপাতত অধরা থেকে যাচ্ছে। এছাড়া কম মাইনের ভারত–চিনের অভিবাসী কর্মীদের উপর নির্ভর মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিও অনেকটাই বিপাকে পড়েছে।