পড়াশোনা করে সাইকেল সারাইয়ের দোকান খুলতে হবে ভাবতে পারেননি তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে এমএ পাশ করেন। চাকরিও পান গাজিয়াবাদের দেবেশ। গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুলে শিক্ষকের চাকরি। দীর্ঘ সাত বছর ধরে সেখানে শিক্ষকতা করেন। ভেবেছিলেন এবার হয়তো স্থায়ী শিক্ষকের পদে পদন্নোতি করা হবে তাঁকে। কিন্তু সেখান থেকে তাঁর চাকরি চলে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁর হাতে ধরিয়ে দেয় বরখাস্তের চিঠি।
সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করে আলিগড় স্কুলে অতিথি শিক্ষক পদে শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু করোনার জেরে লকডাউনে গোটা দেশ। বন্ধ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই ফের কাজ হারিয়েছেন ৪০ বছর বয়সের এই শিক্ষক। দিল্লি প্রশাসন জানিয়েছে, স্কুলের সমস্ত শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁর মতো অস্থায়ী শিক্ষকদের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তই নেয়নি প্রশাসন। তিন মাস হল বাড়ি ভাড়া দিতে পারেননি। রোজই বাড়িওয়ালা তাগাদা দিচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে উপায় কী? শেষমেশ খুলেছেন একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকান। সমস্ত বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে এই দোকান খুলেছেন তিনি। দেবেশ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভাগ্য কোনও সময়ই আমার উপর প্রসন্ন হয়নি। দারিদ্রতার জন্য ডাক্তার হতে পারিনি। সাত বছর ধরে শিক্ষকতা করলাম তখন পদোন্নতির বদলে জুটল বহিষ্কার। এখন আমি এই কাজ করছি। বিজয়নগরে একটি বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে থাকেন দেবেশ। প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা গুনতে হয় বাড়িভাড়া। কাজ হারিয়ে তা অনাদায়ি হয়েছে তিন মাস। বাড়িওয়ালা উঠে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া ছেলেকে ডাক্তার করার স্বপ্ন দেখেন দেবেশ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারের পক্ষ থেকে যদি আদেশ আসে। আমরা নিশ্চয়ই তাঁদের চাকরিতে বহাল করা হবে।