মানুষের জীবিকা কেড়েছে লকডাউন। এই লকডাউনে ইউটিউবকে হাতিয়ার করে কর্মসংস্থানের নতুন দিশা দেখালেন দেগঙ্গার এক গাড়িচালক। এমনকী দেগঙ্গার পলিমাটিতে আঙুর ফলিয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞদেরও তাক লাগিয়েছেন দেগঙ্গার ‘ফল বাড়ির’ মালিক হায়াত আলি। এক বছরের মধ্যে প্রায় দেড় কাঠা জমি ভরে উঠেছে আঙুরের থোকায়। তৃপ্তির হাসি হেসে আগামী দিনে আরও বিঘা দেড়েক জায়গায় আঙুর চাষের পরিকল্পনা নিয়েছেন হায়াত সাহেব।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা এলাকার পশ্চিম চেংদানা গ্রামের বাসিন্দা হায়াত আলি তাঁর ১০৭ গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান। গাড়ি চালানোর পাশাপাশি ফলের বাগান করার শখ ছিল তাঁর প্রথম থেকেই। তাই বাড়ি লাগোয়া দেড় বিঘা জায়গায় তিনি মোসাম্বি ও কমলালেবুর বাগান করেছেন। এছাড়া পেয়ারা ও ড্রাগন ফলের গাছও রয়েছে। লকডাউন সকলের মতো হায়াত সাহেবের জীবনেও কার্যত ব্রেক লাগিয়ে দেয়। গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালানোই তাঁর পক্ষে দুষ্কর হয়ে ওঠে। ইউটিউব ঘেঁটে বিভিন্ন ফলের চাষ দেখতে শুরু করেন। সেখানে বাংলাদেশের এক ব্যক্তি বাড়ির ছাদে টব রেখে কীভাবে আঙুর চাষ করছেন, তা দেখেন। এরপর মহারাষ্ট্রের এক আঙুর চাষির চাষ সংক্রান্ত আলোচনা শোনেন ইউটিউবে। শেষে স্থানীয় একাধিক নার্সারির সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের আঙুরের চারা আনতে বলেন। ২০২০ সালের জুন মাসে ১৩টি আঙুর গাছের চারা নেন। গত জুন মাসে রাস্তা থেকে বাড়ির উঠোন পর্যন্ত প্রায় দেড় কাঠা জায়গায় সেই চারা রোপন করেন হায়াত সাহেব। তিন মাস যেতে না যেতেই সেই গাছে ফুল আসে। ডিসেম্বর মাসে ওই গাছই প্রায় সাত কেজি আঙুর দেয়। এবার এই গাছে আঙুরের ফলন দেখলে অভিজ্ঞ চাষিও অবাক হবেন।
ইতিমধ্যে তিনি বাজারে ১০০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি আঙুর বিক্রি করেছেন। গাছে রয়েছে এখনও প্রায় এক কুইন্টাল আঙুর। শুধু আঙুর কেন, তিনি গত এক বছরে বাড়িতে আপেল, ন্যাসপাতি, বেদানা, অ্যাভোকাডো, স্ট্রবেরি গাছ লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। নার্সারি দেখলেই দাঁড়িয়ে পড়ি। নতুন ফলের গাছ দেখলে আনার চেষ্টা করি। লকডাউনে ইউটিউবে আঙুরের চাষ দেখে উৎসাহ পাই।