লকডাউন এবং ইয়াস–এর জেরে বিপর্যস্ত রাজ্যবাসী। তাই অ্যাপ নির্ভর খাবারের উপর ভরসা করেছিলেন কয়েকজন সরকারি অফিসার। বাইরে বেরিয়ে দেখেন আশেপাশে সব দোকান বন্ধ। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার ভিন রাজ্য থেকে কলকাতায় কাজে এসেছিলেন। ঝড়ে আটকে পড়েন কলকাতায়। অনলাইনে খাবার অর্ডার করেন তাঁরা। খাবার পাওয়া তো দূর উল্টে প্রতারণার শিকার হলেন। এরপরই ত্রিপুরা ভবনের এক আধিকারিক শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগে কী বলা হয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী সংস্থার অ্যাপ ফলো করেন ভবনের এক আধিকারিক। কী কী খাবার রয়েছে তা দেখে খাবার পছন্দ করেন। তারপর প্রায় ৩০ জনের খাবারের অর্ডার দেওয়া হয়। তাতে প্রায় ৭৫ হাজার টাকার বিল হয়। এরপর ওই অ্যাপ থেকে ফোন নম্বর জোগাড় করে অনলাইন খাবার সরবরাহকারী সংস্থার একজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান পেমেন্ট কীভাবে করবেন? সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি জানায়, ডেবিট কার্ডে টাকা মেটাতে হবে। এরপর এই কার্ড দিয়ে ৭৫ হাজার টাকা মেটানো হয়। সন্ধ্যা ৭টার পর অর্ডার দেওয়া হলেও রাত ৯টাতেও খাবার আসেনি।
এরপর এক অফিসার অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থার প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিকে ফোন করেন। জানতে চান, খাবার কখন আসছে? উত্তরে তাঁকে জানানো হয়, ডেলিভারি বয় বেরিয়ে গিয়েছে। মিনিট দশেকের মধ্যেই খাবার পৌঁছে যাবে। ফোনে ওই কথা হওয়ার পর আধ ঘণ্টা কেটে গেলেও খাবার পৌঁছয়নি। অতএব ফের ওই অফিসার ফোন করেন সেই নম্বরে। এরপর আর কেউ তাঁর কলটি রিসিভ করেনি। তখনই তাঁরা বুঝতে পারেন যে প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই তাঁরা থানায় অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, নামী ওই ফুড ডেলিভারি সংস্থার অ্যাপ নকল করে কেউ জাল অ্যাপ তৈরি করেছে।
যে অ্যাকাউন্টে টাকা পেমেন্ট হয়েছে তার সূত্র ধরে জানার চেষ্টা হচ্ছে এটি কার নামে খোলা হয়। সেখান থেকে এই রহস্যভেদ সম্ভব বলে মনে করছে পুলিশ। তার সঙ্গে আসল ওই সংস্থার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে কর্মরত কেউ এই প্রতারণার ঘটনায় জড়িত কি না সেটিও যাচাই করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ ওই অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।