বাংলাদেশ

পণ্যবাহী রেল চলাচলে অর্থনীতির দিশা

সড়ক, আকাশ এবং জলপথের যোগাযোগ এখন অতীত। বাংলাদেশ–ভারতের রেল যোগাযোগ এক নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। বিশেষ করে পণ্যবাহী রেল চলাচল আশঙ্কার মধ্যে সম্ভাবনা। করোনা আবহে স্থলপথ রুদ্ধ। বন্ধ আমদানি–রপ্তানির দুয়ার। তখনই ভারতের পক্ষ থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহণের প্রস্তাব এল। আর প্রস্তাবে রাজি হল বাংলাদেশ।
দুই দেশের প্রচেষ্টায় শুধু জুন মাসেই পণ্য নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে যাতায়ত করে ১০৩টি ট্রেন। এখন রাধিকাপুর–বিরল, পেট্টাপোল–বেনাপোল, দর্শনা–গেদে এবং রহনপুর–সিঙবাদ রুটে পণ্যবাহী ট্রেন যাতায়াতে অতীতের রেকর্ড ভেঙেছে। এইসব রুটে মে, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে ৩৯৫টি পণ্যবাহী ট্রেন এসেছে বাংলাদেশে। পণ্য আমদানি করতে পেরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা খুশি।
২০২১ সালের শেষ নাগাদ পদ্মাসেতু দিয়ে যান চলাচলের আশা করা হচ্ছে। পদ্মার সেতুর ওপর দিয়ে যে রেললাইন হচ্ছে, তারই লিংক যুক্ত হবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে। এরপর ভাঙ্গা, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, গোয়ালন্দ, পোড়াদহ হয়ে যুক্ত হবে খুলনায়। দুই অংশের দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। অপর লিংকটি খুলনা, রূপদিয়া, মাগুরা, যশোর, নড়াইলের বুক বেয়ে এসে মিশবে ভাঙ্গায়। দূরত্ব প্রায় ১৯৮ কিলোমিটার। এরপর মোংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে সরাসরি রেলযোগে পণ্য যাবে উত্তর–পূর্ব ভারতে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
রেল সূত্রে খবর, পদ্মার দক্ষিণ তীরে চলছে উন্নয়নযজ্ঞ। তখন সরাসরি পণ্য পরিবহন হবে উত্তর–পূর্ব ভারতে। উত্তর-পূর্ব দিকে চোখ ফেরালে দেখা মিলবে আবেগের রেলপথ আখাউড়া–আগরতলার। এবারে আরও কিছুটা পথ উত্তরে সরে গেলে শাহবাজপুর। এখান থেকে রেলপথ যুক্ত হচ্ছে অসমের করিমগঞ্জের মহিষাশনের সঙ্গে। খুলনা–চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যবাহী রেল সরাসরি যাবে ভারতের প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরা ও অসমে।
উল্লেখ্য, করোনায় বাংলাদেশ–ভারতের মধ্যে সীমান্তপথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বাংলাদেশে রেলপথে পণ্য পরিবহনের প্রস্তাব দেয় ভারত। তাতে সম্মতি দেয় বাংলাদেশ। ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য শুরু না করা পর্যন্ত রেলপথে পণ্যপরিবহন করার ইচ্ছে থেকেই পণ্যবাহী রেল চলাচলের শুরু।