অর্থনীতি দেশ লিড নিউজ

দেশের জিডিপি নেমে মাইনাস ২৩.৯ শতাংশ

করোনা সংকটে অর্থনৈতিক দিশা দেখাতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। যার জেরে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে দেশের জিডিপির সঙ্কোচন হল ২৩.৯ শতাংশ। এমন অভূতপূর্ব ঘটনা ৪০ বছরে দেখা যায়নি। জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (এনএসও) এই রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে, মাইনাস ২৩.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এই মুহূর্তে দেশের জিডিপি।
কোভিড সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউনের ধাক্কায় মার্চের শেষ থেকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় সবই বন্ধ ছিল। জিডিপি যে কমবে তা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। মতভেদ ছিল, জিডিপি কতখানি কমবে তা নিয়ে। ব্লুমবার্গ একটি সমীক্ষায় জানিয়েছিল, মাইনাস ১৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে জিডিপি। সেটাও ছাপিয়ে গেল। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘গত ১২ মাসে দেশের জিডিপি’‌র চার ভাগের এক ভাগ মুছে গিয়েছে। অন্যভাবে বলতে গেলে ২০১৯–২০ অর্থবর্ষের শেষ থেকে জিডিপি প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।’
এদিকে করোনা সংক্রমণ বাড়তেই প্রথম মার্চ মাসের ২৪ তারিখে ২১ দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের যানবাহন থেকে কলকারখানা স্তব্ধ হয়ে যায়। এরপর ধাপে ধাপে বাড়ানো হয় লকডাউনের মেয়াদ। এক ঝটকায় কাজ হারান লক্ষাধিক মানুষ। পেটের টানে ঘরের দিকে রওনা দেন ভিন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকরা। গত ৩ মাসে তাদের কাজে ফেরানো যায়নি। যদিও অর্থ মন্ত্রকের দাবি, ‘আনলক’ পর্ব শুরু হওয়ার পরে দ্রুত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু সোমবারই দেখা গিয়েছে, জুলাই মাসেও আটটি প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সঙ্কোচন হয়েছে। এই নিয়ে টানা পাঁচ মাস পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সঙ্কোচন চলছে।
অন্যদিকে রিপোর্ট বলছে, সব থেকে বেশি যেখানে কর্মসংস্থান তৈরি হয়, উৎপাদন ক্ষেত্রের বৃদ্ধি নেমেছে মাইনাস ৪০ শতাংশে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে মাইনাস ৫১ শতাংশ, রেস্তোরাঁ–হোটেল ইন্ডাস্ট্রি মাইনাস ৪৭ শতাংশে নেমেছে। একমাত্র কৃষিক্ষেত্রই মাথা তুলে দাঁড়াতে পেরেছে। তবে পরের ত্রৈমাসিকেও জিডিপি’‌র একই হাল থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের মতে, ‘জুলাই ও আগস্ট মাসে অর্থনীতির মাপকাঠি দেখে বোঝা যাচ্ছে, জুলাই–সেপ্টেম্বরেও জিডিপি ১২ থেকে ১৫ শতাংশ কমবে।’