একদিকে রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে বলা হয়েছিল আরও দু’সপ্তাহ লকডাউন জারি রাখতে চায় তারা। সেখানে শুক্রবার ৮ জুন থেকে খুলছে সমস্ত সরকারি, বেসরকারি অফিস। ১ জুন থেকে খুলবে জুটমিল, চায়ের দোকানও। ১ জুন থেকেই খুলছে মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার বলে নবান্নে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে আর লকডাউনের পথে হাঁটতে চাইছে না রাজ্য।
একইসঙ্গে বাসে যাত্রী সংখ্যা নিয়ে বিধিনিষেধ শিথিল করল রাজ্য সরকার। এবার থেকে বাসে আসন সংখ্যার সমান যাত্রী তোলা যাবে। শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সে কথাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন তিনি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে চতুর্থ দফার লকডাউন শেষ হচ্ছে ৩১ মে। তার পরের দিন থেকেই খুলে যাচ্ছে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারের মতো ধর্মীয় স্থানগুলি। তবে বেশ কিছু বিধিনিষেধ মানতে হবে। বাজার–সহ বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক অনুদানও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাধারণ মানুষের স্বার্থে কুড়ি যাত্রীর বিধি শিথিল করা হচ্ছে। এখন থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাসে যতগুলি আসন ততজন যাত্রী তোলা যাবে। তবে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাবে না। প্রত্যেক যাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। তিনি বলেন, ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসছেন। সেখানে কি আদৌ কোনও সুরক্ষাবিধি মানা হচ্ছে? একটা আসনে তিনজন করে আসছেন, গাদাগাদি অবস্থা। ট্রেনে এতগুলো মানুষ গাদাগাদি করে যেতে পারলে চায়ের দোকান, মন্দির, অফিস, জুটমিলও খুলুক।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মন্দির–মসজিদ খুললেও কোনও জমায়েত করা যাবে না। ভেতরে একবারে ১০ জনের বেশি ঢোকা যাবে না। অন্যথা বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ধর্মীয় স্থানে কোনও জমায়েত বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। প্রবেশ পথে ধর্মস্থানগুলির কর্তৃপক্ষকেই স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে। ধর্মস্থানগুলিতে স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। জ্বর বেশি হলে সাধারণ হাসপাতালে বা স্থানীয় চিকিৎসালয়ে নয়, কোভিড হাসপাতালে যান। পরীক্ষা করিয়ে নিন। বস্তির থেকে কিন্তু বিল্ডিংগুলিতে বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, বিষয়টি খেয়াল রাখুন।
নবান্ন থেকে আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থসাহায্যও পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ঘোষণা, অর্থসাহায্য ও পুনর্গঠনে সব মিলিয়ে ৬২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে নগদ ৫ হাজার টাকা দেওয়া হল শুক্রবার। মোট এক লক্ষ পরিবারকে দেওয়া হল। পরে আরও দেওয়া হবে। পানের বরজের জন্য ২০০ কোটি টাকা, রাস্তা মেরামত খাতে ১০০ কোটি, পোল্ট্রি এবং গবাদি পশুর ক্ষতির জন্য ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের এককালীন অনুদান দেওয়া হবে ১৫০০ টাকা। ২০ লক্ষ কৃষককে এই সাহায্য করা হবে।
