আজ ফের শুনানি। চার নেতার জেল না জামিন? এটাই আজ সবথেকে বড় প্রশ্ন। একদিকে নেতাদের প্রভাবশালী তত্ত্বে জোর দিতে চাইছে সিবিআই। অন্যদিকে, অভিযুক্তদের পক্ষে জামিনের আর্জি জানানো হচ্ছে। হাজতবাস নয়। তবে নারদ মামলায় ধৃত চার নেতা–মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আপাতত গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাদের ওপরে নজর থাকবে সিবিআইয়ের।
যদি ধৃত নেতাদের গৃহবন্দি রাখা হয়, তাহলে কোভিড পরিস্থিতিতে ফিরহাদ হাকিম কীভাবে কাজ করবেন? প্রশ্ন অভিষেক মনু সিংভির। ‘এরা যা কিছু করতে পারে। মামলা খুবই গম্ভীর। চারজনকে হাউস এরেস্ট করা হোক।’ শুনানির শুরুতেই বললেন সিবিআইয়ের পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা। শুরুতেই সিবিআই প্রভাবশালী তত্ত্বে জোর দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁর দাবি, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দিলে মামলা প্রভাবিত করতে পারেন নেতারা।
শুনানির শুরুতেই নারদ মামলায় চার হেভিওয়েটকে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল জামিনের পক্ষে ছিলেন না। তাই তাঁর নির্দেশে প্রত্যেককেই গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের। চার নেতামন্ত্রীর অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন নিয়ে শুক্রবার সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। অন্তবর্তী জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়। সেই মতভেদের জন্যই ধৃত চারজনকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগেও অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, তাঁর মক্কেলরা হয় মন্ত্রী, না হয় বিধায়ক। তাঁদের কোথাও পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আজও সেই একই সওয়াল করলেন তিনি। বললেন, ‘এরা কেউ মন্ত্রী, কেউ বিধায়ক, কোথাও যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাহলে কেন গ্রেপ্তার?’ তবে সিবিআই–এর গৃহবন্দি করার সওয়ালে তিনি দাবি করেন যাতে স্বাধীনতার বিষয়টাতে নজর দেওয়া হয়। গৃহবন্দি করা হলে অভিযুক্তদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হবে বলে মনে করেন তিনি।
নিয়ম অনুযায়ী, দুই বিচারপতি যে হেতু সহমত হননি সেই কারণেই পরবর্তী বেঞ্চ তৈরি করতে হবে। সেখানে এই মামলা পাঠানো হবে, ততদিন পর্যন্ত গৃহবন্দিই থাকতে হবে ফিরহাদ–সুব্রত–মদন–শোভনকে। যদিও গৃহবন্দি থাকাকালীন চিকিৎসার যাবতীয় সাহায্য করা হবে। একইভাবে তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে হেভিওয়েটদের। এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি আদালতে। এই অবস্থায় উচ্চতর বেঞ্চে মামলা নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সিংভি বলেন, ‘দুই বিচারপতির মতভেদ হলে তৃতীয় বিচারপতির কাছে যাবে এটাই হওয়া উচিত।’ তৃণমূল সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেছেন, মামলা যদি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয় তবে শুক্রবারই পাঠানো হোক।