সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে কেন্দ্র। এবার ব্যাঙ্কেরও বেসরকারিকরণ করার প্রস্তাব দিয়েছে মোদী সরকার। তাদের সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথে নামছেন ব্যাঙ্কের কর্মচারীরা। প্রতিবাদ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে মার্চ মাসে পরপর দু’দিন ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিল কর্মচারী ইউনিয়ন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। দু’দিনের ধর্মঘটের ডাক দিল ন’টি ইউনিয়নের সম্মিলত সংগঠন ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার ইউএফবিইউ ঘোষণা করে, রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি ব্যাঙ্কের প্রস্তাবিত বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করে আগামী ১৫–১৬ মার্চ দু’দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
এই ধর্মঘট হলে মার্চ মাসে টানা চারদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। যার জেরে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে পারেন গ্রাহকরা। গত সপ্তাহে পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বিলগ্নিকরণ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের ঘোষণা করেছিলেন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার আইডিবিআই ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ করে এলআইসির কাছে সিংহভাগ অংশিদারিত্ব বিক্রি করে দিয়েছে। পাশাপাশি শেষ চার বছরে ১৪টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ হয়েছে।
এরপর থেকেই সর্বস্তরে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসেবে ১৫–১৬ মার্চ গোটা দেশে ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ফলে বেজায় বিপাকে পড়তে চলেছেন সাধারণ গ্রাহকরা। কারণ তার আগে ১৩–১৪ তারিখও ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। ১৩ তারিখ মার্চ মাসের দ্বিতীয় শনিবার। স্বাভাবিকভাবেই সেদিন বন্ধ থাকবে ব্যাঙ্ক। ১৪ তারিখ রবিবার। সপ্তাহের শুরুতেই দু’দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখার ডাক দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাহত হতে পারে এটিএম পরিষেবাও।
মঙ্গলবার ইউএফবিইউর বৈঠকে ব্যাঙ্কগুলির বেসরকারিকরণের নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিএইচ ভেঙ্কটচলম। ইউএফবিইউ’র অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলির মধ্যে রয়েছে এআইবিইএ, এআইবিওসি, এনসিবিই, এআইবিওএ এবং বিইএফআই। অন্যান্য ব্যাঙ্ক কর্মচারি সংগঠনগুলির মধ্যে রয়েছে আইএনবিইএফ, আইএনবিওসি, এনওবিডব্লিউ এবং এনওবিও। আলোচনার পরে সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ১৫-১৬ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এআইবিওসি’র সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত।
এই বিলগ্নিকরণ নীতি নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। টুইটে বিজেপিকে বিঁধে রাহুলের কটাক্ষ, ‘মোদী সরকারের উন্নয়নের অর্থ সরকারি সংস্থাকে বিক্রি করে দেওয়া। এতে দেশের ক্ষতি হলেও, কিছু মানুষের লাভ হবে।’