নিজেদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের পথে বাংলাদেশ। মায়ানমার সেনা অভিযানের মুখে পড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনের জন্য সেখানকার আট হাজার একরেরও বেশি জঙ্গল উজাড় হয়ে গিয়েছে। অরণ্য ধ্বংসের জেরে আর্থিক ক্ষতির অঙ্কও প্রচুর বলে খবর। ২৪২০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি লোকসানের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি অষ্টম সম্মেলনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ব্যাপক হারে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে থাকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষজন। এই মুহূর্তে তাঁদের সংখ্যা ১১ লক্ষ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। এঁরা সকলেরই রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলের বনভূমিতে এঁরা বসতি স্থাপন করেছে।
তার জেরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৪২০ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকারও বেশি। বনবিভাগের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। তবে সংসদীয় কমিটির দাবি, ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। কমিটির মতে, ক্ষতি প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত বনজ সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি টাকার অঙ্কে প্রায় ৪৫৭ কোটি টাকা এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি প্রায় ১৪০৯ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। মোট ক্ষতির আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ১৮৬৫ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা।
রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কিত আরও বিস্তারিত তথ্য বিশ্লেষণ করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য বনবিজ্ঞানের অধ্যাপককে আহ্বায়ক এবং বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে (কক্সবাজার) সদস্য সচিব করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে পরিবেশ, বন ও জীববৈচিত্র্যে যে প্রভাব পড়ছে, তা সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের ৮ হাজার একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ৯ হাজারের বেশি টিউবওয়েল তৈরি করতে হয়েছে। এই কারণে জলের স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে নামছে। কক্সবাজার বনাঞ্চলেই প্রথম রোহিঙ্গারা বসতি স্থাপন করে। দিন দিন মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য কার্বন ডাই–অক্সাইডের পরিমাণও বেড়েছে।
