বাংলাদেশ

বানভাসি সুনামগঞ্জে আবার বর্ষণের ভ্রূকূটি

দু’‌দফা বন্যায় বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ। এবার ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, সুনামগঞ্জে সোমবার থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কথা। দু’‌দিন আগে থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি ঝরছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার। এখন সুরমা নদীর জল বেড়েছে ২৭ সেন্টিমিটার। জল বাড়ছে হাওরে।
কাহিল সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার মানুষ। গত কয়েক দিনে জল কিছুটা কমলেও মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটে এখনও জল রয়েছে। এখনও জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর, ছাতক এবং জামালগঞ্জ উপজেলার সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে আবার শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। রবিবার দুপুরে জেলা সদরের সুনামগঞ্জ–বিশ্বম্ভরপুর সড়কের সালামপুর এলাকায় দিয়ে দেখা গিয়েছে জল প্রবল বেগে সেতুর নিচ দিয়ে হাওরে ঢুকছে। এভাবে জল বাড়তে থাকলে রাতেই এই সড়ক আবার প্লাবিত হতে পারে।
বিশ্বম্ভরপুর–তাহিরপুর সড়কে বাঘমারা থেকে শক্তিয়ারখলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক বন্যার জলে প্লাবিত। মানুষজন বাঘমারা থেকে শক্তিয়ারখলা পর্যন্ত নৌকায় যাতায়াত করছেন। তাহিরপুর উপজেলায় যেতে বাঘমারা এলাকা ছাড়াও সড়কের তাহিরপুর অংশে আনোয়ারপুর এলাকায় আবার নৌকায় পারাপার হতে হয়। এখানে প্রায় একমাস ধরে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ।
সুনামগঞ্জ জল উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে খবর, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় ২৫ জুন। আর সপ্তাহখানেক পর পরিস্থিতি যখন উন্নতি হচ্ছিল তখন ১০ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়। এতে জেলার সব কটি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। বাড়িঘর–রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় মানুষজন ভোগান্তিতে পড়েন। বন্যার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনো জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে বন্যায় ১ লাখ ৮ হাজার ১২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩২৪টি পরিবার রয়েছে। জেলায় ১ হাজার ৪৮৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বন্যার্তদের মধ্যে ৮৬৫ মেট্রিক টন চাল, ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৩ হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ২ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ২ লাখ টাকার গোখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।