জেলা লিড নিউজ

দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে চলছে টানা বৃষ্টি। কখনও টুপটাপ তো কখনও মুষলধারে। সঙ্গে চলছে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। সব মিলিয়ে প্রাক-পুজোর এই সময়ে দক্ষিণবঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। বহু জায়গা জলমগ্ন হয়েছে নতুন করে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বানভাসি এলাকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই ক’দিনে জলস্তর যেটুকু কমেছিল, তা নিম্নচাপের জেরে এই টানা বর্ষণে ফের আগের জায়গায় চলে গিয়েছে। শহরাঞ্চলগুলিতেও বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন।

হাওড়া, বারাসত, কামারহাটি, পানিহাটি, বনগাঁ, বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় আগের বৃষ্টির জলই নামেনি বহু জায়গা থেকে। সেই সব এলাকায় এই দফার বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় টানা বৃষ্টি চললেও ভারী বৃষ্টি সেভাবে হয়নি। তাই দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কম এবার। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় নবান্নে। প্রত্যেক জেলাশাসকের কাছ থেকে রিপোর্ট নেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।

ভারী বর্ষণ না হওয়ায় সেই জল সরানো সম্ভব হয়েছে। উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণে বৃষ্টির প্রকোপ বেশি ছিল। হাওড়ায় ৭ নম্বর ওয়ার্ড সহ বেশ কিছু জায়গায় গত ১৫-২০ দিন ধরেই জল জমে রয়েছে। এই বৃষ্টিতে সেসব জায়গার অবস্থা রীতিমতো বেহাল। টিকিয়াপাড়া কারশেড এলাকায় রেললাইনের উপর জল জমায় ট্রেনের গতি শ্লথ করতে হয়। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি, বেলঘরিয়া, আগরপাড়ার কিছু জায়গায় জল জমে। কাঁচরাপাড়ার গান্ধীমোড়ে পানীয় জলের পাইপলাইন থেকে জল বেরিয়ে এলাকা জলমগ্ন করে দেয়। তার সঙ্গে বৃষ্টির জল মিশে ভোগান্তি বাড়ে মানুষের।

বারুইপুর পুরসভার ২, ৪, ১৩, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড ফের জলমগ্ন হয়েছে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকার বহু এলাকা আগে থেকেই জলে ডুবেছিল। সেসব এলাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কুলতলি, জয়নগর, মজিলপুরের অনেক এলাকা জলমগ্ন হয় নতুন করে। বজবজ, পূজালি, মহেশতলা পুরসভার বিভিন্ন এলাকার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েন। সেভাবে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় হুগলির অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো। পূর্ব মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। গড়ে প্রায় ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এই জেলায়।

নিম্নচাপের কেন্দ্র হলদিয়ায় অবস্থান করায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে এখানে। দেওয়াল চাপা পড়ে দুই মেদিনীপুরে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ায় ঘাটাল মহকুমা এলাকাতেই ৫০টির বেশি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন। খড়্গপুর স্টেশনের প্রবেশপথে এবং খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনেও জল দাঁড়িয়ে যায়। মেদিনীপুর শহর লাগোয়া ধর্মার কাছে জাতীয় সড়কের উপর জল বইতে থাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার মালিয়াড়া অঞ্চলের তেঁতুলপোহা গ্রামে গোয়ালঘর ভেঙে চাপা পড়ে পাঁচটি গোরুর মৃত্যু হয়েছে। নদীয়ার শান্তিপুরের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর কলোনি এলাকার প্রায় ৮০টি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে।