পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের প্রবল বর্ষণ। আর তার জেরেই প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়া শুরু করেছে দুই রাজ্যেরই জলাধারগুলি। বানভাসি এলাকাগুলির পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। প্লাবিত হতে শুরু করেছে নতুন এলাকা। হাওড়া, হুগলি, বর্ধমানের বেশ কিছু এলাকা দ্বিতীয়বার বন্যার সম্মুখীন। শুক্রবারই বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঁচজন মারা গিয়েছেন।
গত ১৪ তারিখ থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগে শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৬৫ জন মারা গেলেন। আজ, শনিবার আরামবাগ সহ দক্ষিণবঙ্গের বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিনই ব্যারেজগুলি থেকে অপরিকল্পিতভাবে জল ছাড়া নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে বেশি বৃষ্টি হলে বাড়তি জলের ভার পশ্চিমবঙ্গকেই বারবার কেন নিতে হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ডিভিসির জলাধারগুলি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সেগুলির জলধারণ ক্ষমতা ক্রমশ কমেছে। তারা জল ছাড়লে ডুবছে বাংলা। জলাধারগুলি সংস্কারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে দু’দিন উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে। পরশু থেকে দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানান, ব্যারেজগুলি ক্রমাগত জল ছেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা ভাবা যাচ্ছে না।
সেচদপ্তর সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে ব্যারেজগুলি থেকে মোট ৬ লক্ষ ৬০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। বিকেলে পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে ৬ লক্ষ ২০ হাজার কিউসেক করা হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজ এবং ঝাড়খণ্ডের গালুডি ও সিকাতিয়া জলাধার থেকে প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে। অজয়, দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়ণ, দামোদর, কেলেঘাই, শিলাবতী, ওল্ড কাঁসাই, কপালেশ্বরী, দুর্বাচটি নদীগুলির জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। রাজ্যের মুখ্যসচিব এদিন নবান্নে জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই বন্যা কবলিত। চার লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে। ত্রাণ শিবিরেই আছেন প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ।