হিজাব বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ইরান। এবার হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল তেহরানের আদালত। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অন্যায়ের অভিযোগেই ওই প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য এই প্রথমবার মৃত্যুর সাজা ঘোষণা করেছে ইরানের প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, প্রতিবাদের সময়ে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন এক আন্দোলনকারী ব্যক্তি। সেই জন্যই তেহরানের আদালত তাঁকে ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধে’ দোষী সাব্যস্ত করেছে। সাজা হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবাদীকে। সেই সঙ্গে আরও পাঁচ প্রতিবাদীকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ইরানের অপর একটি আদালত। সব মিলিয়ে কুড়ি জন প্রতিবাদীর বিরুদ্ধে এমন মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
প্রায় দু’মাস ধরে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ইরান। শুধুমাত্র হিজাব না পরার কারণে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় ইরানের তরুণী মাহসা আমিনির। তারপরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা ইরান। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে অন্তত সাড়ে তিনশোজন প্রতিবাদীকে হত্যা করেছে সেদেশের প্রশাসন। প্রায় পনের হাজার প্রতিবাদীকে নানা অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ইরানের বালুচিস্তানে সবথেকে বেশি মানুষ হিজাব বিরোধী আন্দোলন করে প্রাণ হারিয়েছেন। কার্যত ওই প্রদেশের মৃতের সংখ্যা ১২৩। আর এবার সরাসরি মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ। জানা গিয়েছে- সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ, নাগরিক জীবনে অশান্তি ছড়ানো, বেআইনি জমায়েত, জাতীয় সুরক্ষা নষ্টের চেষ্টা এবং ষড়যন্ত্রের মতন একাধিক অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। সমস্ত অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। আর এই সমস্ত অপরাধের কারণে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও হিজাব বিরোধী আন্দোলন থামবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কার্যত এই আন্দোলনকে থামানোর জন্য সবরকম ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে রাষ্ট্র। মৃত্যুদণ্ডাদেশ সেরকমই একটি চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।