করোনা আবহে শতাব্দীর প্রথম সাধারণ বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অতিমারীর আবহে দেশকে ফের উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে ‘আত্মনির্ভর ভারত’–এর মন্ত্রই আওড়ালেন তিনি। এবার পেপারলেস কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ট্যাব থেকেই বাজেট পড়লেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথম কোনও বাজেট কাগজ ছাপা হল না। কারণ, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী। প্রতি বছর কেন্দ্রীয় বাজেট অর্থ মন্ত্রকের নিজস্ব প্রেসে ছাপা হয়। প্রায় ১০০ কর্মী দু’সপ্তাহ দিন–রাত জেগে এই ছাপার কাজ করে থাকেন। বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লাইন উদ্ধৃত করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
সোমবার বাজেট পেশের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, গমের জন্য ২০১৩–১৪ সালে কৃষকদের ৩৩,৮৭৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। ২০২০–২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৫,০৬০ কোটি টাকা। ২০১৩–১৪ সালে ধানের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৯৮,০০০ কোটি টাকার মতো। ২০২০–২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে (পূর্বাভাস) ১৭২,৭৫২ কোটি টাকা।
এরপরই তিনি ভোটের ‘উপহার’ হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ–সহ ৪ রাজ্যে অর্থনৈতিক করিডরের ঘোষণা করেন। জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ বেসরকারি হাতে দেওয়া হবে। যে রাজ্যগুলিতে বিধানসভা ভোট হবে, সেখানে অর্থনৈতিক করিডরের ‘উপহার’ দিলেন নির্মলা সীতারামন। তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের বড় বরাদ্দ করা হল। পশ্চিমবঙ্গে ৬৭৫ কিমি অর্থনৈতিক করিডর করা হবে। তার জন্য বরাদ্দ হচ্ছে ২৫,০০০ কোটি টাকা। একইসঙ্গে কলকাতা–শিলিগুড়ি সড়কের উন্নয়ন করা হচ্ছে। তামিলনাড়ু পেয়েছে ৩,৫০০ কিলোমিটার, কেরালা পাচ্ছে ১,১১০ কিলোমিটার, অসম পাচ্ছে ১,৩০০ কিলোমিটার। অসমে আগামী তিন বছরে হবে সেই কাজ।
বাংলা এখন ভোটের পাখির চোখ। তাই বাংলা নিয়ে বিস্তর ঘোষণা করেন তিনি। সেখানে তিনি জানান, লজিস্টিক খরচ কমানো হবে। বাংলার ফ্রেট করিডোরে জোর দেওয়া। ভিস্তা ডোম চালু করা হবে। নিরাপত্তা বাড়াতে হাই ডেনসিটি রুটে অটোমেটিক রেল সিকিউরিটি থাকবে। রাস্তা ও হাইওয়ে তৈরির ক্ষেত্রে ভারতমালা প্রকল্পে জোর। কলকাতা–শিলিগুড়ি হাইওয়ে ও অসমের রাস্তা উন্নয়নে মোটা টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী তিন বছরে তা খরচ হবে। ক্যাপিটাল এক্সপেনডেচার বাড়ানো হল। সেখানে ৫.৫৪ লক্ষ কোটি বরাদ্দ করা হচ্ছে। কোভিড ভ্যাকসিন খাতে ৩৫ হাজার কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে।
এদিন বাজেট পেশের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানান, এবার থেকে জাতীয় সড়ক নির্মাণ এবং দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হবে বেসরকারি সংস্থার হাতেও। পিপিপি মডেলে তৈরি হবে রাস্তা। বাংলার খড়গপুরকে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে ফ্রেইট করিডোরও। বিজয়ওয়াড়া থেকে খড়গপুর পর্যন্ত তৈরি হবে ফ্রেইট করিডোর। কাজ হবে গোমত–ডানকুনি লাইনেও কাজ হবে। গোমত থেকে ডানকুনি পর্যন্ত ২৭৪ কিমি রেলের ট্র্যাক তৈরি করা হবে। ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকরণ করা হবে। কোচগুলির আধুনিকীকরণ করা হবে।