ঘোরালো হচ্ছে হরিয়ানার কারনালের পরিস্থিতি। আন্দোলনকারী কৃষকদের নাছোড়বান্দা মনোভাবে চাপ বাড়ছে বিজেপি সরকারের উপর। উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকারেরও। কৃষকদের দাবি একটাই, যে পুলিশ আধিকারিক কৃষকদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁকে বরখাস্ত করতে হবে। অভিযুক্ত আয়ুষ সিনহার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করতে হবে। ওই নির্দেশের পরই পুলিশ যেভাবে নির্বিচারে কৃষকদের উপর লাঠি চালিয়েছিল। আর সেই আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে আন্দোলনকারী কৃষক সুশীল কাজলের বলে অভিযোগ কৃষক সংগঠনগুলির। এই দাবিতে কারনালের মিনি সচিবালয় ঘেরাও করে রেখেছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা।
বুধবার কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করে হরিয়ানা সরকার। কিন্তু বৈঠক শেষের পর ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের সর্বভারতীয় নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়ে দিয়েছেন, ‘দীর্ঘ বৈঠক চললেও সমাধানসূত্র মেলেনি।’ কেন্দ্র–রাজ্যে বিজেপি সরকারকে আরও উৎকণ্ঠার মধ্যে ফেলে সংযুক্ত কিষান মোর্চা ঘোষণা করে দিয়েছে যে, অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ঘেরাও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হবেন কৃষকরা। রাকেশ টিকায়েত বলেন, ‘পুলিশ কৃষকদের দাবি মানতে রাজি নয়। ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে তারা খুনের মামলা রুজুও করতে চাইছে না, তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্তও করতে চাইছে না। বরং ওই আধিকারিকের কাজের ব্যাখ্যা ও সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর বোধহয় দিল্লি সীমানার আন্দোলনকে কারনালে উঠিয়ে আনতে চাইছেন।’
এরই মধ্যে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দরসিং হুডা কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘সরকারের উচিত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে যাওয়া। বরং তাঁদের কথা বলে সম্মানজনক সমাধান খোঁজা উচিত।’ সংযুক্ত কিষান মোর্চার কটাক্ষ, অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ন্যূনতম তদন্তের নির্দেশ না দিয়ে হরিয়ানা সরকার বুঝিয়ে দিচ্ছে, চাষিদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ কারা দিয়েছিল।
টিকায়েতের হুঁশিয়ারি, ‘কৃষকরা ইতিমধ্যেই দিল্লিকে পাঁচটি দিক দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। এই কৃষকদের বড় অংশই হরিয়ানার বাসিন্দা।’ রাজ্য প্রশাসনের জন্য সবথেকে উদ্বেগের বিষয় হল, বিক্ষোভস্থল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে। এদিকে, মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে ঘোষণামতোই এমএসপি আইনের দাবিতে এদিন দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে গেরুয়া শিবিরেরই কৃষক সংগঠন বিকেএস।