দেশ ব্রেকিং নিউজ

বাড়ল কৃষক আন্দোলনের মাত্রা

শনিবার থেকে আরও শক্তিশালী হওয়ার পথে কৃষক আন্দোলন। হরিয়ানার পাশাপাশি, এবার দিল্লি–জয়পুর সড়কও অবরোধ করার পথে কৃষকরা। আর তার মধ্যেই দিল্লির কৃষক আন্দোলনের দখল নিয়ে নিয়েছে টুকরে টুকরে গ্যাং বলে অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। আর তাই সরকার এবং কৃষকদের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে না বলেই দাবি তাঁর। এই মন্তব্যের পর আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে কৃষক আন্দোলন। এখন তা ঠেকানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই কৃষক আন্দোলন যতই শক্তিশালী হোক, কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হবে না বলে সাফ জানাচ্ছে কেন্দ্র। তারা মনে করছে, তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন দু’তিনটি রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তা সত্ত্বেও কৃষকদের আপত্তি মেনে সরকার আইনে বেশ কিছু সংশোধনে রাজি হলেও আইন প্রত্যাহার করা সম্ভব নয় বলেই কেন্দ্রের মত। ১৬ দিন হয়ে গিয়েছে কৃষক আন্দোলনের। ইতিমধ্যেই টিকারি সীমান্তে শারজিল ইমাম, উমর খালিদ, গৌতম নাভলাখা–সহ দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্তদের মুক্তির দাবিতে পোস্টার পড়েছে। সেই ছবি ভাইরালও হয়ে গিয়েছে। কয়েকজন কৃষক নেতা দাবি করেছেন, ওঁদের ছেড়ে দেওয়া উচিত। আর তা থেকেই বিতর্ক অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। কেবল রবিশংকর প্রসাদই নন, নরেন্দ্র সিং তোমার এবং প্রকাশ জাভড়েকরের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও একই অভিযোগ করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে কৃষক সংগঠনগুলি আন্দোলন আরও জোরদার করার ডাক দিয়েছেন। হরিয়ানা থেকে দিল্লি, গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লিতে ঢোকার সড়ক অবরোধের পরে জয়পুর থেকে দিল্লিতে ঢোকার সড়ক অবরোধ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। শনিবার থেকে এই অবরোধ শুরু হয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারিতে এক আরটিআইয়ের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’ সম্পর্কে কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। এবার উলটো সুর শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানান, কৃষকদের অনেক দাবি ইতিমধ্যেই মেনে নিয়েছে সরকার। কিন্তু কৃষি আইনের পাশাপাশি ওই নেতাদের মুক্তির দাবিও জানাচ্ছেন কৃষকরা। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যে ৩২টি কৃষক সংগঠন আন্দোলন করছে, তাদের মধ্যে একটি সংগঠন শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এই আইন প্রত্যাহার করার জন্য। এই কৃষি আইন নিয়ে ‘অপপ্রচার’ দূর করার জন্য বিশাল প্রচারে নামছে শাসক বিজেপি। দেশজুড়ে ১০০টি সাংবাদিক সম্মেলন এবং ৭০০ জেলায় ৭০০টি কৃষক বৈঠক করার পরিকল্পনা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। যদিও তাতে গেরুয়া শিবির বিশেষ স্বস্তিতে নেই। তাই এই আন্দোলনকে থামাতে পাল্টা তোপ দাগতে শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ টুকরে টুকরে গ্যাং শব্দবন্ধটির জন্ম গেরুয়া শিবিরেরই। জেএনইউয়ের বিরুদ্ধে বরাবরই বিজেপি অভিযোগ করে এসেছে এখানে ভারতকে টুকরো করার চক্রান্ত করা হয়। সেই কারণেই এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’ নামে ডাকে তারা। ইতিমধ্যেই হরিয়ানার উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌতলা হুমকি দিয়েছেন, সহায়ক মূল্য নির্ধারণ না করা হলে হরিয়ানা সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবে তাঁর দল।