বিতর্কিত তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে হরিয়ানার জিন্দ থেকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক কৃষকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। আত্মঘাতী হন ৫২ বছর বয়সী ওই কৃষক। দিল্লির বহু সীমান্তে প্রায় ৭০ দিন ধরে চলছে কৃষকদের আন্দোলন। আগেও আন্দোলনরত কৃষকদের আত্মহত্যায় ঘটনা ঘটেছে। টিকরি সীমান্তে কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। মৃত কৃষকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, টিকরি সীমানা থেকে দু’কিলোমিটারের মধ্যে একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কৃষকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সেটা ওই কৃষকের লেখা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহটি স্থানীয় মানুষের চোখে পড়ে। হরিয়ানা–পাঞ্জাবের কয়েক হাজার কৃষক গত ৭০ দিন ধরে দিল্লির বিভিন্ন সীমান্তে আন্দোলন জারি রেখেছেন। তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন করছেন।
ওই সুইসাইড নোটে কৃষক লিখেছেন, প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা, মোদী সরকার তারিখের পর তারিখ দিচ্ছে। এই কৃষিকাজ আইন কবে প্রত্যাহার করবে, তা কেউ জানে না।’ জানুয়ারি মাসে এই টিকরি সীমান্তেই আরও এক কৃষক আত্মঘাতী হয়েছিলেন। ডিসেম্বর মাসে টিকরি সীমান্ত থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একজন আইনজীবী আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তার আগে সন্ত রাম সিং নামের এক শিখ ধর্মপ্রচারক কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে আত্মহত্যা করেছিলেন। সিংঘু সীমান্তে তাঁর আত্মহত্যা পর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে হরিয়ানার আরও এক কৃষক বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে দিল্লি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। দিনকয়েক আগে দিল্লির সীমান্তে থেকে বাড়ি ফেরার পর ২২ বছর এক কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছিল। সিংঘু সীমান্তে ৬৫ বছর বয়সী এক কৃষক বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সতীর্থদের চেষ্টায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বারবার আলোচনায় বসেছিল সরকার পক্ষ। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। কৃষকরা তাঁদের দাবিতে অনড়। তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার ছাড়া সরকারের অন্য কোনও প্রস্তাবে সায় দিতে নারাজ কৃষকরা। তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে প্রায় ছ’মাস ধরে বিক্ষোভ অবস্থান করছেন কৃষকরা। সরকারের সঙ্গে একাধিক দফায় আলোচনা এবং সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের মধ্যে এখনও অধরা সমাধানসূত্র।