উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর গ্যাং পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যোগীরাজ্যে বসেই জাল আধার কার্ড তৈরির চক্র চালাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। সারা দেশে তাদের এজেন্ট ছড়ানো রয়েছে। টাকা দিতে হবে, তাহলেই মিলবে ভুয়ো কার্ড তৈরির ‘ফ্রাঞ্চাইজি’। আধার বানানোর আইডি ও পাসওয়ার্ড ক্লোন করে তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর এভাবেই উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও বিহার ও রাজস্থানে ছড়িয়ে গিয়েছে এই চক্রের ডালপালা। দেশের নানা ঠিকানার আধার তৈরি হচ্ছে এখানে। মোটা টাকার বিনিময়ে। তবে মূল শাখাপ্রশাখা উত্তরপ্রদেশেই।
প্রতারক থেকে জঙ্গি, বিভিন্ন মামলায় এমন একটা চক্রের হদিশ পেয়ে তদন্তকারী অফিসাররা কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থেকে তিন এজেন্টকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের মধ্যে জিয়াগঞ্জ এলাকার অতুল এবং হাকিম শেখকে জেরা করে তদন্তকারীরা উত্তরপ্রদেশের এই গ্যাংটির কথা জানতে পারে। জানা যায় যোগীরাজ্যের বেশ কয়েকজন প্রতারকের নামও। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য সাগরদিঘি থানার একটি পুলিশের দল সে রাজ্যে যায়। গ্রেপ্তার হয় কালীচরণ ওরফে রামস্বরূপ নামে ২৮ বছরের এক যুবক।
পুলিশ সূত্রে খবর, উপযুক্ত নথির প্রয়োজন নেই, টাকা ফেললেই এরা কার্ড তৈরি করে দেয়। ভুয়ো আধার ব্যবহার করে অনেকেই অপরাধমূলক কাজ করতে পারে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। সম্প্রতি বিএসএফ নদীয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কয়েকজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জেরা করে বাহিনীর আধিকারিকরা জানতে পারেন, ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে কেরল এবং তামিলনাড়ুতেও কয়েকশো বাংলাদেশি রয়েছে। তাছাড়া কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন জেএমবি জঙ্গির কাছ থেকেও ভুয়ো পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। তাই উত্তরপ্রদেশের ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির চক্রটির হদিশ মেলায় আধিকারিকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া যুবককে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে।’
সূত্রের খবর, এই চক্রের এজেন্টরা টাকার বিনিময়ে যে কাউকে আধার কার্ড বানিয়ে দিত। তা তারা সংশোধনও করে দিত। কোনও নথি না থাকলে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে কার্ড বানানো হতো। কার্ড তৈরির অর্ধেক টাকা এজেন্টরা উত্তরপ্রদেশের প্রতারকদের কাছে পাঠাত। মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেও এই চক্রটি বহুজনকেই ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে দিয়েছে। তবে এজেন্টরা এখানে কাজ করলেও এই চক্র উত্তরপ্রদেশ থেকেই কলকাঠি নাড়ে।