স্বাস্থ্য

ঘুমের সংকটে আসে অবসাদগ্রস্ত দিন

দিনের কাজ ভালোভাবে সারতে চাই রাতে ভালো ঘুম। যারা রাত জাগেন তাদের জন্য বিশেষজ্ঞরা এনেছেন সতর্কবাণী। তাদের দাবি, রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে পরদিন যেকোনো ঝামেলার পরিস্থিতিতে একজন ব্যক্তি তুলনামূলক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে সাড়া দেন। আবার ভালো ঘটনার প্রতিও তারা তেমন ইতিবাচকভাবে সাড়া দিতে পারেন না।

‘হেলথ সাইকোলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ঘুমের কারণে মানুষ স্বাভাবিক ও চাপে থাকার সময়ে কী রকম প্রতিক্রিয়া দেয়। এই গবেষণা প্রধান গবেষক, কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলোম্বিয়া’র ন্যান্সি সিন বলেন, “সাধারণত একজন মানুষের সঙ্গে যখন দিনে ভালো কিছু ঘটে, ভালো একটা সময় কাটায়, তার পুরো দিনটা তুলনামূলক আনন্দঘনভাবেই কাটে। তবে একজন ব্যক্তির যদি রাতে ভালো ঘুম না হয়, সেক্ষেত্রে জীবনের ভালো ঘটনার প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার মতো মানসিক শক্তি তার থাকে না।”

এই গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই হাজার নাগরিকের ঘুমের অভ্যাস এবং নেতিবাচক ও ইতিবাচক ঘটনার প্রতি তাদের সাড়া দেওয়ার ধরন নিয়ে পর্যালোচনা করেন গবেষকরা। আট দিনের পরিক্রমায় এই অংশগ্রহণকারীদের ফোনে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। যেখানে তাদের রাতে ঘুমানোর পরিমাণ এবং পরদিন তাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার প্রতি সাড়া দেওয়ার ধরন সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। এই অংশগ্রহণকারীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কলহ, মানসিক চাপ, বাকবিতণ্ডা ইত্যাদির কথাও বলেন। তবে যারা রাতে ভালো ঘুমাননি, তারা এই ঘটনাগুলোর প্রতি সাড়া দেন স্বাভাবিকের তুলনায় রূঢ় মেজাজে। এই রূঢ়তা বা উত্তেজিত হয়ে যাওয়ার স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও আছে। সিন এবং অন্যদের করা আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, যেকোনো ঝামেলায় মেজাজ শান্ত রাখতে না-পারা থেকে বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি উঠে আসে। এমনকি অকাল মৃত্যুও ডেকে আনে।

সিন বলেন, “বয়স্করা, যারা বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, তারা পর্যাপ্ত ঘুম থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি সুবিধা পান কি-না সেই বিষয়টা নিয়ে পর্যালোচনা করতে আমরা আগ্রহী। এমননি যারা এমন রোগে ভুগছেন, তারা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘুমালে তাদের শারীরিক সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা আরেকটু সহজ হতে পারে।”

গবেষকদের ধারণা, ঘুমকে আরও বেশি প্রাধান্য দেওয়ার মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হওয়া সম্ভব।

সূত্র : রয়টার্স।