বর্তমান বিশ্বে বাসায় বসে বিনোদনের এক মাত্র অন্যতম মাধ্যম টেলিভিশন। সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার প্রায় বেশিরভাগই অবসর সময়ে টিভি দেখতে পছন্দ করে। তবে অতিরিক্ত টিভি দেখার ফলে বিনোদনের সঙ্গে কিছু ক্ষতি হচ্ছে আমাদের শরীরে।
পরিসংখ্যান বলছে,মধ্যবয়সে ঘন্টার পর ঘন্টা টিভির সামনে বসে থাকার কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে ধীরে ধীরে মস্তিষ্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। যেমন, স্মৃতিশক্তি, শ্রবণশক্তি, দৃষ্টি ও মস্তিস্কের ধূসর পদার্থ (সাধারণত জ্ঞান দক্ষতা অর্জনের সঙ্গে যুক্ত), পেশী নিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ মস্তিষ্কের অনেক কার্যক্রম দুর্বল হতে থাকে।
বৈজ্ঞানিক এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, যারা দৈনিক সাড়ে তিন ঘন্টার বেশি সময় ধরে টেলিভিশন দেখেছেন, তাদের ক্ষেত্রে ৮% থেকে ১০% পর্যন্ত ভার্বাল মেমোরি হ্রাস পেয়েছে। আর যাদের টেলিভিশন দেখার সময়সীমা এর চাইতে কম, তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের স্মৃতি হ্রাসের হার ৪% থেকে ৫%। এমনকি অনেক বেশি সময় নিয়ে টেলিভিশন দেখা এতটাই ক্ষতিকর যে তা মানুষকে শরীরচর্চা থেকে বিরত রাখে।
জানা গেছে, ঘন্টার পর ঘন্টা টিভি দেখলে প্রতি ঘন্টার হৃদরোগের কারণে মৃত্যু সম্ভাবনা প্রায় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে প্রায় ৯ শতাংশ। টিভি থেকে বেরনো আলো আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে হওয়া মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরন কমিয়ে দেয়। ফলে সহজে ঘুম আসতে চায় না। এছাড়া বহুক্ষণ ধরে টিভি দেখলে পেশির সঞ্চালন কমে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতাও কমে যেতে শুরু করে। ফলে ওজন বাড়তে থাকে।
আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন তত্ত্বাবধায়নে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে টানা দুই ঘন্টা টিভি দেখলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়ে যায়। বেশিক্ষণ টিভি দেখলে রেটিনার উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। ফলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। বিশেষ করে যারা অন্ধকারে বসে টিভি দেখে তাদের চোখে বেশি ক্ষতি হয়। টিভি দেখার সময় যত বাড়তে থাকে, ততই আমাদের শরীরে রোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।