বিরোধী রাজনীতিবিদরা বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নিট–জয়েন্ট পরীক্ষা বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। আর পরীক্ষা যদি আরও পেছোনো হয়, তা হলে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে জানালেন দেশ বিদেশের দেড়শো শিক্ষাবিদ। এখন কোন পথে হাঁটবে কেন্দ্র তা দেখতে চাইছে গোটা দেশ। কারণ প্রধানমন্ত্রীর সামনে উভয়সংকট পরিস্থিতি।
নিট–জয়েন্ট স্থগিত করার দাবিতে এককাট্টা বিরোধীরা। তখনই এমন চিঠি দিলেন শিক্ষাবিদরা। সেখানে তাঁরা বলেছেন, ‘কেউ কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছেন!’ অথচ বিরোধীদের দাবি, এখন পরীক্ষায় বসলে তাদের শরীরে করোনা বাসা বাঁধতে পারে। আবার ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদে নামতে চলেছে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে। সবমিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতি এখন দেশে।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে শিক্ষাবিদরা লিখেছেন, ‘পরীক্ষা ও ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে দেশের লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের উচিত দ্রুত তা নিরসন করা। মহামারির অজুহাতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ, স্বপ্ন নিয়ে আপস করা উচিত হবে না। যে দিন নির্ধারিত হয়েছে, সেই দিনগুলিতেই ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা হোক। আর দেরি করলে ছাত্রছাত্রীদের সর্বনাশ হবে।’ সুতরাং শিক্ষাবিদদের দাবি এখন জোরালো হয়ে উঠছে।
জানা গিয়েছে, যাঁরা চিঠি লিখেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেএনইউ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি, আইআইটি দিল্লি, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক, উপাচার্যরা। এমনকী ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া–সহ জেরুজালেম, ইজরায়েলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ভারতীয় অধ্যাপকরাও এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে সরকার কি পদক্ষেপ নেয় তার ওপর নির্ভর করছে দেশ–বিদেশের সামনে ভারতের ভাহমূর্তি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ১–৬ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ১১ জন ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ‘করোনা সংক্রমণের কারণে জীবন থমকে থাকবে না। এই কারণে ইতিমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তাদের আরও একটা বছর নষ্ট হবে।’
উল্লেখ্য, জয়েন্ট আর নিট পেছোনোর দাবিতে বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হন সাত অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করুক। না হলে সবাই মিলে সুপ্রিম কোর্ট চলুন।
