নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামের প্রবাসীরা অন্যবারের মতো এবারও অসুরদলনীর আরাধনায় মেতে উঠেছেন। এখন বাঙালির শ্রেষ্ঠ মহোৎসব দুর্গাপুজোয় মেতে উঠতে প্রবাসীদের সেই অর্থে বাঁধা নেই। কিন্তু করোনাকালীন যে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আবশ্যিক, সেইসব বিধিনিষেধ মানতে বদ্ধপরিকর আমস্টারডামের দুর্গাপুজো আয়োজকরা সবাই। যদিও বদ্ধপরিসরে তথা পরিবহনকালীন মাস্ক পরিধান একান্তভাবেই বাধ্যতামূলক এদেশে, কিন্তু উন্মুক্তস্থানে তুলনামূলক কম জনবহুল স্থানে মাস্ক পরায় ছাড় দিয়েছে এদেশের ডাচ পৌরসংস্থা।
পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজো করাটা যতটা সহজ, এদেশে বা আমি মনে করি প্রবাসে পুজো করাটা ততটা সহজ নয়। এদেশে আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মতো কোনও ক্লাব প্রাঙ্গণ নেই যে সেখানে পুজো হবে, এখানে প্রেক্ষাগৃহ চাই সমস্ত পুজো আয়োজনের জন্য। তাই প্রাথমিকভাবে সব আয়োজকদেরই একটু কালঘাম ছোটাতে হয়েছিল বটে! পরবর্তীতে ডাচ পৌরসংস্থা অনুমোদন দেয়।
সদা তৎপর থাকেন নেদারল্যান্ডের প্রবাসী বাঙালি ও গোটা ডাচ সম্প্রদায়। এদেশে পুজোয় দেশি-বিদেশি সবাই সাদরে স্বাগত, কিন্তু করোনার সম্পূর্ণ টীকাকরণ বাধ্যতামূলক। এবং সম্পূর্ণ টীকাকরণের উপযুক্ত শংসাপত্র ছাড়া এখানে মন্ডপে প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে আয়োজকদের তরফে থেকে। ‘কল্লোল’, ‘হইচই’, ‘আনন্দধারা’-এই তিনটে সংগঠন পুজোর আয়োজন করে।
পুজোর ওই কটা দিন পুজোই হবে, তা কিন্তু নয়। রয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সমস্ত আয়োজকদের তরফ থেকেই তাদের নিজস্ব ক্ষেত্রে। উল্লেখযোগ্য- বসে আঁকো প্রতিযোগীতা, নাচ-গান এবং সবথেকে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে আমার মতে আনন্দধারা আয়োজিত সেল্ফি কনটেস্ট। আনন্দধারা সভ্যবৃন্দরা এই সেল্ফি কনটেস্টের নাম দিয়েছেন ‘পুজোর তিলোত্তমা’। বঙ্গরমণীদের নিজেকে সেরা প্রমাণ করার অন্যতম সেরা মঞ্চ এই প্রতিযোগীতা।
আলোর বেণু বেজেই গিয়েছে নেদারল্যান্ডের মাটিতে। এবার আমস্টারডামের ভুবন মাতিয়ে তোলার পালা। ঢাকিরাও চলে এসেছেন নিজেদের তালে সবাইকে করোনা নামক অতিমারীর প্রকোপ থেকে কিছুটা হলেও ভুলিয়ে রাখবেন এই আশায়। মা জগজ্জননী আমাদের সমস্ত বিপদ, আপদ, অতিমারী থেকে রক্ষা করবেন এই আশা নিয়ে তৈরি হচ্ছে আমস্টারডামবাসী বঙ্গসন্তানগণ।