রাজ্য

অবশেষে ছন্দে ফিরছে কুমোরটুলি

সদ্য ছাঁচ থেকে বের করা দুর্গা প্রতিমার মুখে আঙুল বোলাতে বোলাতে বলছিলেন বাসন্তী মৃৎ শিল্পালয়ের সামনে বসে থাকা ভবেশরঞ্জন পাল। সত্যিই, গত ১৫ দিনে যেন বদলে গিয়েছে গোটা কুমোরটুলির চালচিত্র। গত বছরের ভয়াবহ স্মৃতি ফিকে হতে হতে প্রায় উধাও। কোভিডবিধির বজ্রআঁটুনিও নেই। ফিরে এসেছে শখের ফটোগ্রাফারের ঝাঁক, মুঠোফোনের ছবিশিকারিরা। তার সঙ্গে ফিরেছে প্রতিমার বরাতের সুদিন। আর তা অতি অবশ্যই সাবেকি ধাঁচের।ভাদ্রের শেষ।

আর কদিন পরেই কাশফুলের ছবি নিয়ে দেখা দেবে আশ্বিন। অথচ ‘ভরা‌ বাদর’-এর যেন শেষ হয়েও হচ্ছে না। ৪৮ ঘণ্টা পর কড়া রোদের দেখা মিলেছে আকাশে। যার রেশ শিল্পী-কারিগরদের চোখেমুখেও। ২০ দিন আগে কুমোরটুলির ছবি বলছে, প্রস্তুতি শুরু হয়েছে সামান্য দেরিতেই। অন্যান্যবার আগস্টের মাঝামাঝি রঙের ছোঁয়া পড়ে মোহনবাঁশি রুদ্র পালের ওয়ার্কশপের প্রতিমায়।

এবার সেখানে প্রায় একমাস দেরিতে শিল্পীদের হাতে উঠেছে তুলি। কারণ? বরাত দেরিতে আসা। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতির সম্পাদক তথা শিল্পী বাবু পাল জানালেন, ‘এবারে অবস্থা ভালো। রথযাত্রা থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত তেমন বরাত আসেনি। ফলে ভরসা করতে পারছিলাম না। কিন্তু জন্মাষ্টমী থেকে অর্ডারের ঢল নেমেছে। একটু দেরি হলেও খুব ভালো লাগছে।’

এবার একচালা ছয়-সাত ফুটের প্রতিমার দাম ঘোরাফেরা করছে ৩০-৩৫ হাজারে। একাধিক চালায় সাত-আট ফুটের দাম প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা। তারপর উচ্চতা এবং সাজ অনুযায়ী ৬০-৮০ হাজারে চুক্তি হচ্ছে। ২০১৯ সালেও লাখ ছাড়িয়ে যেত বহু প্রতিমার দাম। এবার তা বেশ কম। ছোট দুর্গার চাহিদা সর্বাধিক। নেই খুব বেশি থিমের প্রতিমাও। গোটা কুমোরটুলিতে সেরকম ১০-১২টির বেশি কাঠামো চোখে পড়বে না বলে জানালেন মৃৎশিল্পী সংস্কৃতির সদস্য সঞ্জয় পাল।