প্রবল আর্থিক সংকটের জেরে কলকাতা পুরসভার পেনশন বন্ধের নোটিশকে ঘিরে চরম উদ্বেগে অবসরপ্রাপ্ত পুর-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরসভার তরফে এই নোটিশে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে। যা নিয়ে রাজ্য সরকারের দিকে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি।
গতকাল সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভার তরফে একটি নোটিশ দিয়ে বলা হয়, গত ২০২১ -র সেপ্টেম্বর থেকে যাঁরা পেনশন নিয়েছেন, সেইসব কর্মীদের পেনশন এবং পেনশন সংক্রান্ত সুবিধা আপাতত দেওয়া যাচ্ছে না। আর্থিক সংকটের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় কলকাতা পুরসভা।উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে কলকাতায় পুরসভায় প্রায় ২২ হাজার স্থায়ী কর্মী রয়েছেন, তাঁদের বেতন দেয় রাজ্য সরকার। অন্যদিকে প্রায় ২৬ হাজার অস্থায়ী কর্মীর পারিশ্রমিক দেয় কলকাতা পুরসভা।
যদিও কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনি পদে থাকার সময় এমন ব্যবস্থা করেন, যাতে কর্মীদের পেনশন কিংবা বেতনের অভাব হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত খরচ করে ফেলেছে কলকাতা পুরসভা।
অপরদিকে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আজ পেনশন করেছে, আগামীতে বেতনও বন্ধ করে দেবে।’ দিলীপ আরও বলেন, আগামীতে রাজ্যের একাধিক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে মেয়রের পদে বসার পরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিপুল দেনা নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসছেন। এই আর্থিক অবস্থার মধ্যেই সবকিছু চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাই পরিস্থিতির সামাল দিতে তিনি রাজ্য সরকারের কাছে ৭০০ কোটি টাকা চেয়ে আবেদন করেন। পাশাপাশি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে কলকাতা পুরসভা ২০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়।
এদিকে বিজেপি যুব মোর্চা রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খান টুইটে করেন, খেলা-মেলা-ক্লাব সবার জন্য টাকা আছে, কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত খেটে খাওয়া মানুষ, যাঁরা কর্মজীবন শেষ করেছেন, তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য পাচ্ছেন না। তিনি প্রশ্ন করেন, অবসর নিয়েছেন বলেই কি তাঁদের আর কাজে লাগবে না? তাঁর আরও জিজ্ঞাস্য, করদাতাদের টাকা যাচ্ছেন কোথায়? বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণের টাকাই বা যাচ্ছে কোথায়?