রাজ্যে করোনার প্রকোপ যে বাড়ছে তা ফের টের পাওয়া গেল। আজ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একসঙ্গে তিনজন চিকিৎসক এবং দু’জন রোগী আক্রান্ত হলেন করোনা ভাইরাসে। এদের মধ্যে একজন করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বাকি দুইজন প্রসূতি বিভাগের ডাক্তার। এই চিকিৎসকদের মধ্যে একজন আবার হস্টেলে থাকতেন। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেই কারণে ওই হস্টেলের ১২ জন ডাক্তারকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হল।
স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে আজ এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, চিকিৎসক,নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজের দিনগুলিতে আর বাড়ি ফিরতে পারবেন না। সরকারি তরফ থেকেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। কাজের মানসিক চাপ এবং সেইসঙ্গে তাদের পরিবারে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায় সেই জন্যই এই ব্যবস্থা বলে জানান হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ডাক্তার,নার্স,স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে রাজ্যে মোট ৩৩ জন করোনা আক্রান্ত। স্বভাবতই চিন্তায় পরেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। একদিকে ভেঙে যেতে পারে স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল অন্যদিকে রাজ্যে অভাব ঘটতে পারে চিকিৎসকের। দেখা দিতে পারে চূড়ান্ত চিকিৎসক সংকট। তাছাড়া এমনিতেই রাজ্যে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন প্রচুর সংখ্যক ডাক্তার।
রাজ্যের হিসাব অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ১৯৮ জন(যদিও কেন্দ্র সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী সংখ্যাটা ৩১০) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন। যাঁদের মধ্যে এই তিনজন চিকিৎসক ও দু’জন রোগী রয়েছেন। তিনজন চিকিৎসককে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বাকি দু’জন রোগীকে বারাসাত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তা নিয়েও। বরাবর দেখা গিয়েছে, জেলা থেকে মানুষ কলকাতায় এসেছেন চিকিৎসার জন্য। সেখানে কলকাতা থেকে করোনা আক্রান্তদের বারাসাতে পাঠানো হল কেন? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে করোনা চিকিৎসার কেন্দ্র করা হয়েছে কয়েকদিন আগেই। রয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। এসএসকেএম রয়েছে চিকিৎসার জন্য। কিছুদিন আগে সব রোগীদের সরিয়ে বাঙুর হাসপাতালে কেবলমাত্র করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হল। সেখানে কলকাতা থেকে বারাসাতে করোনার রোগীদের যেতে হল কেন? যেখানে নতুন করে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও আন্যান্য রোগীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভবনা থেকেই যায়। সাধারণের মনে এখন এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে তাহলে কী আর জায়গা নেই কলকাতার হাসপাতালগুলিতে? তাহলে কী ১৯৮ সংখ্যাটি সঠিক নয়? পরিস্থিতি কী আরও ঘোরালো?