রাজ্য

ফুয়াদ ডাক্তারের কাজই দলের অন্দরে প্রশ্ন তুলে দিল

প্রকৃত বামপন্থীর সংজ্ঞা কি?‌ এই প্রশ্ন এখন দলের মধ্যেই জোরালো হয়ে উঠছে। কারণ মানুষের সেবা করা, মানুষের সমস্যায় পাশে থাকা এবং সমাজকে দিশা দেখানোই প্রকৃত বামপন্থীর পরিচয় বলে ধরা হয়। এমনকী তাঁর জীবনযাপন হবে অত্যন্ত সাধারণ। গোটা লকডাউন পর্বে তাঁকে মানুষের পাশেই থাকতে দেখা গিয়েছিল। মানুষের সেবা করতে করতে তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন মারণ ভাইরাসে। হাসপাতাল ভর্তি থাকাকালীনই অবস্থা সংকটজনক হয়ে উঠেছিল বাম নেতা তথা বিশিষ্ট চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমের। তারপরও সেখান থেকেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘‌৩১ আগস্ট পর্যন্ত স্বাস্থ্য সংকল্প হাসপাতালে ৫০ টাকায় ডায়ালিসিস করা হবে।’‌
এটাই কী প্রকৃত বামপন্থীর পরিচয় নয়?‌ কিন্তু দলের অন্দরে এখন ক’‌জন এমন নেতা আছেন?‌ এই প্রশ্নেই জর্জরিত আলিমুদ্দিন। কারণ জীবন–যুদ্ধে যখন লড়ছেন ফুয়াদ তখনও মানুষের কথা ভাবলেন। আর কিছু নেতাকে দেখা গেল নিজেকে আড়ালে সরিয়ে রাখলেন। এবার করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরে এসেছেন প্রয়াত প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের ছেলে ডাঃ ফুয়াদ হালিম। এমনকী পুরোদমে জনসেবায় লেগে পড়েছেন তিনি। আবারও জানিয়ে দিলেন, তাঁর স্বাস্থ্য সংকল্প হাসপাতালে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকায় চলবে এই ডায়ালিসিস পরিষেবা।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, কলকাতা স্বাস্থ্য সংকল্প হাসপাতালে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডায়ালিসিস হবে মাত্র ৫০ টাকায়। ২৬ মার্চ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৪০৩৫ জন ৫০ টাকায় ডায়ালিসিস করেছেন। গত ২৬ মার্চ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩১৫৪ জন মানুষের ডায়ালিসিস হয়েছে মাত্র ৫০ টাকায়। আর দলের নেতারা শুধুই পার্টি অফিসের ভেতরে আলোচনা করেই গেলেন। রাস্তায় দেখা গেল না।
গোটা লকডাউনে তিনি গরিব মানুষের চিকিৎসায় উদ্যোগী ছিলেন। অধিকাংশ মানুষ গৃহবন্দি থাকলেও ফুয়াদ ডাক্তারের কাজ যেন সেই সময়ই বেড়ে গিয়েছিল । লকডাউনের সময় এই স্বাস্থ্য সংকল্প হাসপাতাল হয়ে উঠেছে গরিবের সুরাহার ঠিকানা। গোটা লকডাউনে রাজ্যে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা নিয়ে যখন নাজেহাল হচ্ছিল মানুষ, ফুয়াদ হালিমের এই হাসপাতালে তখন হাজার–হাজার গরিব মানুষের ভিড়।
এরপরই জুলাই মাসে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। শেষমেশ করোনাকে হারিয়ে ২ আগস্ট বাড়ি ফেরেন ফুয়াদ হালিম। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তাঁকে ছুটি দেয় বেসরকারি হাসপাতাল। আর বাড়ি ফিরে কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়েই আবার নিজের কাজে লেগে পড়েছেন ফুয়াদ ডাক্তার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, প্রথমসারির নেতারা কোথায়?‌ যার কোনও উত্তর নেই।