গত বছরের মার্চ মাস থেকে বন্ধ রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। বন্ধ শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার রান্নাও। ফলে তাদের অপুষ্টির শিকার হওয়ার আশঙ্কা ছিল তীব্র। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই লকডাউনের মধ্যে শুরু হয় শিশুদের জন্য বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী বিতরণের কাজ। আর তাতে এল সাফল্য। গত এক বছরে রাজ্যে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর হার নেমে এসেছে এক শতাংশেরও নীচে। মাত্র ০.১৫ শতাংশ।
চলতি মাসেই জেলায় জেলায় সদ্যোজাত থেকে ছ’বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের ওজন মাপার কাজ শুরু হয়। সেই রিপোর্ট তৈরি হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, গোটা রাজ্যে ০.১৫ শতাংশ শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার। কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি জেলায় এই হার একেবারে নগণ্য। ০.১ শতাংশও নয়। সর্বাধিক অপুষ্টি রোগে ভুগছে, এমন শিশুর হার তুলনামূলকভাবে বেশি জঙ্গলমহলে।
পুরুলিয়ায় ০.৭৯ শতাংশ, ঝাড়গ্রামে ০.৩৯ শতাংশ। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে এই হার সামান্য বেশি, ০.২৯ শতাংশ। কিন্তু সার্বিকভাবে দেখলে সেটাও অনেক কম। আইসিডিএস সেন্টার থেকে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বাদের পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়া হয়। যতটা প্রয়োজন, তা মেপে রান্না করা খাবার মিলত। করোনার জন্য সেটা বন্ধ। বিকল্প হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বাড়ি বাড়ি দেওয়া শুরু হওয়ার পরও সমালোচনা থামেনি। বাচ্চারা প্রয়োজনমত পুষ্টি পাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই।
মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের নিয়েই বেশি উদ্বেগে থাকে প্রশাসন। কারণ, অল্প অপুষ্টিতে ভুগছে, এমন বাচ্চারা সামান্য যত্ন আর পুষ্টি পেলেই স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু মারাত্মক অপুষ্টি ক্ষতি করতে পারে তাদের স্বাস্থ্যের। কিন্তু রাজ্যে যা চিত্র ধরা পড়ছে, তাতে বিরাট উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। যে সামান্য সংখ্যক বাচ্চা প্রবল অপুষ্টিতে ভুগছে, তাদের জন্য ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।