জেলা

উৎসবে মেতে উঠেছে জেলা

মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যাতেই ঝলমলিয়ে উঠল উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলা। আলোকের ঝর্ণাধারায় ভেসে গেল গৌড়বঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি প্রান্ত। কোচবিহার থেকে মালদহ সর্বত্র রাস্তাঘাট আলোর মালায় সেজে উঠেছে। পুজো প্যান্ডেলগুলির সামনেও দেখা যায়, চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা। এক বছর পরে সপরিবারে ঘরে এসেছেন মা দুর্গা। মাকে স্বাগত জানিয়ে সন্ধ্যা নামতেই জ্বলে উঠল হাজার হাজার আলো। এই আলোর রোশনাইয়ে করোনা মহামারীকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া চরম বিষণ্ণতা যেন এক লহমায় কেটে গেল মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই। লক্ষ আলোর সঙ্গে বোধনের আরতির পঞ্চপ্রদীপের আলো মিলেমিশে তৈরি হয়ে গেল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের মাহেন্দ্রক্ষণ।

শিলিগুড়িতে বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের সামনে আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। হিলকার্ট রোডের ডিভাইডারের বাতিস্তম্ভগুলি সাজিয়ে তোলা হয়েছে রঙিন এলইডি আলোর মালায়। মালদহ শহরের বিজি রোড, রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ, কে জে সান্যাল রোড, নেতাজি সুভাষ রোড থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক – সর্বত্রই আলোর ছটা। আলোয় সেজে উঠেছে কোচবিহারের মাথাভাঙাও। পচাগড় মোড়ের আজাদ হিন্দ ক্লাবের আলোকসজ্জা সুটুঙ্গার দ্বিতীয় সেতু পর্যন্ত আলোকিত করে রেখেছে। ঝঙ্কার ক্লাব মোড় থেকে চৌপথী পর্যন্ত আমলাপাড়া পুজো কমিটির নানা রঙের বাল্বের আলোয় গোটা এলাকা উজ্বল হয়ে উঠেছে।

আমলাপাড়া সেট্রাল হস্টেল মোড় দুর্গাপুজা কমিটির চন্দননগরের আদলের আলোকসজ্জা রীতিমতো নজর কাড়ছে মানুষের। পূর্বপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির চন্দননগরের আদলে আলোকসজ্জা বাজার এলাকার মূল রাস্তাগুলিকে আলোকিত করছে। আলিপুরদুয়ার শহরের ১১ হাত কালীবাড়ির মিলন সঙ্ঘের চন্দননগরের মায়াবি আলো দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।

আলোয় সেজে উঠেছে মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপ। বক্সা ফিডার রোডের উপর মিলন সঙ্ঘ তিনটি আকাশচুম্বি আলোর তোরণ বানিয়েছে। আলোর রোশনাইয়ে একেবারেই পিছিয়ে নেই এবছর শহরের সবচেয়ে বিগবাজেটের পুজো লোহারপুল ইউনিটও। লোহারপুল ইউনিটের আলোর রোশনাইও দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। কোচবিহারের শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপে চন্দননগরের আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। তারমধ্যে রয়েছে দক্ষিণ খাগড়াবাড়ি ক্লাব, এসিডিসি ক্লাব, কিশোর সঙ্ঘ, ভারত ক্লাব সহ বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ। আলোর রোশনাইয়ে ভাসল দিনহাটার একাধিক পুজো মণ্ডপও। শহরের গোপালনগর দক্ষিণাংশ, গোধুলি বাজার, বোর্ডিংপাড়া, গোসানিরোড সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির পক্ষ থেকে মণ্ডপ ও তার চারপাশের রাস্তায় বাহারি লাইটে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

এদিকে, জলপাইগুড়ি বামনপাড়া যুবক সঙ্ঘ, তরুণ দল, অরবিন্দনগরের জাগৃতি সঙ্ঘের পুজোয় চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা দেখতে মানুষের ভিড় করছে। ময়নাগুড়ি আনন্দনগর ইয়ুথ ক্লাবের পুজো, দেবীনগর সানরাইজ ক্লাবের চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা ষষ্ঠীর দিন থেকেই লোকজনের মধ্যে উন্মাদনা তৈরি করেছে।অন্যদিকে, ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠেছে উত্তর দিনাজপুর। জেলার ইসলামপুরের কেএমসি ক্লাবের মণ্ডপ সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার দু’ধারে আলোকসজ্জা দেখার মতো। পাইওনিয়ার্স ক্লাবের আলোকসজ্জাও দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে।

হেমতাবাদের কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গাপুজা কমিটি এবার চন্দননগরের আলোকসজ্জা দিয়ে দর্শনার্থীদের মন জয় করে নিয়েছে। রায়গঞ্জের বিপ্লবী সঙ্ঘ, অমর সুব্রত, শাস্ত্রী সঙ্ঘ, সুদর্শনপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির আলোকসজ্জা দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।দুর্গাপুজা উপলক্ষে আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠেছে বালুরঘাট শহর। বালুরঘাটের উত্তমাশা ক্লাব, কচিকলা, সৃজনী, ত্রিধারা, প্রগতি সঙ্ঘ, বিপ্লবী সঙ্ঘ, অভিযাত্রী সহ বিভিন্ন ক্লাপের পুজো মণ্ডপ ও আশপাশের এলাকা চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে। ত্রিধারা ক্লাবে ৬৮ ফুটের আলোক তোরণ দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে। বালুরঘাটের পাশাপাশি হিলির রাস্তাও আলোয় সেজে উঠেছে।