জেলা

‘‌সুযোগ পেলে আমিও কার্ড করব’‌

পরিবারের বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানোয় লাগাতার শাসকদলের কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হচ্ছে তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে খানিকটা অন্যরকম সুর শোনা গেল মেদিনীপুরের সাংসদের গলায়। তিনি বলেন, ‘‌আমি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের বিরোধী নই!’‌
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পরিবারের সদস্যরাই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ্যে এসেছে। আর তারপরই পাল্টা তীব্র কটাক্ষে বিঁধলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‌আজ দিলীপ ঘোষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছে। ওর পরিবারের সকলেই কার্ড করেছে। উপায় নেই। দেখছে দলটা থাকবে না, মুছে যাবে। তার আগে সারেন্ডার করি।’‌
পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের বিরোধিতা করছি না। আমি সরকারের প্রতারণার বিরোধিতা করছি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করার সুযোগ পেলে আমিও করব। কিন্তু কার্ড পেলেন অথচ সুযোগ পেলেন না, তাহলে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড মাথায় নিয়ে শুয়ে থাকলে কি জ্বর কমবে?’‌
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকেও ভেকধারী লোক বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। বলেন, ‘‌শুধু নাড্ডা নয়, বিজেপির যাঁরা যাঁরাই বাংলায় আসছেন, তাঁরা সকলেই ভেকধারী। ভেক না ধরলে ভিক্ষা মিলবে না।’‌‌ কাটোয়ার মুস্থুলী গ্রামের পাঁচ কৃষকের বাড়ি থেকে জেপি নাড্ডা মুষ্টিভিক্ষা করে রাজ্যে কৃষক সুরক্ষা কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন। বিজেপির সেই কৃষক সুরক্ষা কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেন অনুব্রত মণ্ডল।
উল্লেখ্য, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের আদি বাড়ি ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা গ্রামে। এখনও সাংসদের মা, ভাই–সহ পরিবারের সদস্যরা সেখানেই থাকেন। ভাই হীরক ঘোষ গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। খুড়তুতো ভাই সুকেশ ঘোষ জেলা বিজেপির সহ–সভাপতি। তাই স্বাভাবিকভাবেই দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি তাঁর ভাইদের গলায়ও সর্বদাই শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী সুর। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রসঙ্গেও বারবার রাজ্যকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। এসবের মাঝেই সম্প্রতি যেখানে গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ছবি তোলা হচ্ছে, সেখানে দেখা যায় হীরক ঘোষের স্ত্রী–সহ পরিবারের বেশ কয়েকজনকে। বঙ্গ–বিজেপির প্রথমসারির নেতার পরিবারের সদস্যদের এই কার্ডের লাইনে নজরে পড়তেই নানারকম আলোচনা শুরু হয়েছে।
এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌দিদিমণি তো ১০ কোটি লোককে দিচ্ছেন, তাই করেছেন, সুযোগ পেলে আমিও করে নেব। আমি বিরোধিতা করিনি। আমি বলেছি, দিদিমণি চালাকি করছেন। সাড়ে ৩ কোটি লোককে দিয়েছিলেন। তারা কেউ পায়নি। আবার ১০ কোটি লোককে দেবেন বলে বোকা বানাচ্ছেন।’‌