ডায়ারিয়া নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ শুরু হয়েছে কামারহাটিতে। এই পুরসভার ১ থেকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় ডায়ারিয়ার প্রকোপ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯-১০ জন কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু’জন ডায়ারিয়া আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ডায়ারিয়া আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জল্পনা ছড়াতে শুরু করেছে, এটা কি ডায়ারিয়া, নাকি কলেরা আবার ফিরে এল?
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার থেকে এলাকার অনেকেই বমি ও পেটের সমস্যায় ভুগছে। সোমবার রাত থেকে তা বেড়ে যায়। কুমোরপাড়া, ষষ্ঠীতলা, গ্রাহাম রোড, ওল্ড লাইন, ফুলবাগান, চিংড়িতলা, কালাচাঁদ ব্যানার্জি রোড, দাশুবাগান, সাগরদত্ত ঘাট রোড, নীলরতন অধিকারী রোড সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আক্রান্তের খবর আসতে শুরু করে। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ডায়ারিয়াতে আক্রান্ত হয়ে জানকী বিবি এবং মিনতি সাহা নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, কেএমডিএ, বরানগর-কামারহাটি যৌথ জলপ্রকল্প, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের প্রকল্প, কামারহাটি জুট মিল এবং নলকূপ থেকে পুর এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। ওই পাঁচটি ওয়ার্ডের জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বুধবার তা নাইসেডে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে। কারণ, বর্ষার সময় জল থেকে এই ধরনের ডায়ারিয়ার প্রকোপ দেখা যায়।
কামারহাটির পুরপ্রশাসক গোপাল সাহা বলেন, ‘আমরা এলাকায় প্রচার করে সবাইকে বলেছি, আপাতত সবাই যেন জল ফুটিয়ে খান। তাহলে অনেকটাই নিরাপদ হবে।’ পরিদর্শনে যান পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বিমল সাহা। তিনি বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঠে নামানো হয়েছে। তাঁরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। প্রত্যেকের বাড়িতেই তাঁরা হ্যালোজেন ট্যাবলেট এবং ওআরএসের প্যাকেট বিলি করছেন। বুধবার সকাল থেকে মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করা হবে।’ বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে একটি পৃথক ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। আরও দু’টি ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। যে দু’জনের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে একজন ডায়ারিয়ায় মারা গিয়েছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। তবে ডায়ারিয়ায় তিনি মারা যাননি। তিনি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। দু’দিন ধরে তাঁর ইউরিন হচ্ছিল না। অন্য রোগীর একাধিকবার বমি হয়েছিল। অনেক দেরিতে তাঁকে আনা হয়েছিল হাসপাতালে। তাঁর মৃত্যু কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’