সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন শুধুই স্মৃতি রোমন্থন। ‘আমাদের কারখানায় আগুন লেগেছে৷ কেউ বেরোতে পারছি না৷ আমি যদি কোনও ভুল করে থাকি, ক্ষমা করে দিস৷’ নিজের ছোট ভাইকে ফোন করে এই কথাগুলি বলতে পেরেছিলেন ২৭ বছরের মহম্মদ আলি৷ বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অভিশপ্ত জুস কারখানায় সিনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন মহম্মদ আলি৷ তারপর আগুনের লেলিহান শিখায় সব শেষ।
দাদার ফোন পেয়ে ভাই যখন কারখানার সামনে পৌঁছলেন, ততক্ষণে ৬ তলার গোটা বহুতলটিকে গ্রাস করেছে বিধ্বংসী আগুনে৷ মহম্মদ আলির মতো অনেকেই সেই আগুনের গ্রাস থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেননি৷ জীবন্ত দগ্ধ হয়ে অন্তত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ যা মেনে নিতে পারছেন না ওপারের বাসিন্দারা। তাই এখন চারিদিকে শোনা যাচ্ছে স্বজন হারানো হাহাকার।
যে দেহগুলি উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই শনাক্ত করার মতো অবস্থায় নেই৷ ফলে ডিএনএ পরীক্ষাই একমাত্র উপায়৷ মহম্মদ আলির মতো নিখোঁজ কর্মী এবং শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের হাহাকার বাড়ছে হাসপাতালের মর্গের বাইরে৷ প্রবল ক্ষোভ থেকেই উদ্ধারকাজ চলাকালীন কারখানার বাইরে থাকা বেশ কিছু যানবাহনেও ভাঙচুর চালান নিখোঁজদের পরিজনেরা৷ যার জেরে ব্যাহত হয় উদ্ধারকাজ৷
ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার হওয়া দেহগুলি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ প্রিয়জনের খোঁজ পাওয়ার আশায় সেখানেই এখন ভিড় করেছেন পরিবারের সদস্যরা৷
ইতিমধ্যেই শেখ হাসিনা সরকারকে দায়ী করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি৷ এই ঘটনার দায় সরকার এড়াতে পারে না বলেই দাবি তাদের৷ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ নিহত এবং আহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে৷