দিল্লির ইজরায়েল দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল জৈশ–উল–হিন্দ। তাদের টেলিগ্রাম চ্যাট তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে এই ‘সন্ত্রাসবাদী’ সংগঠন। তবে সেই চ্যাট এখনও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। তবে সরকারিভাবে তদন্তকারীদের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তদন্তে নেমে একটি খাম পেয়েছে দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেল। সেখানে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ও ইরানের এক পরমানু বিজ্ঞানীর উল্লেখ রয়েছে। ফলে মনে করা হচ্ছে ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে ইরান যোগের কথা উঠে আসছে।
ওই টেলিগ্রাম চ্যাটে জৈশ–উল–হিন্দ সংগঠটের পরবর্তী পরিকল্পনার হদিশ মিলেছে বলেও খবর। সূত্রের দাবি, এই সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন শহরে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষেছে। তাই মুম্বই–সহ একাধিক শহরে উচ্চ–সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে যে মুখবন্ধ খাম উদ্ধার হয়েছিল সেখানে ইজরায়েল দূতাবাসের সামনের বিস্ফোরণকে ‘ট্রেলার’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিস্ফোরণের হুমকি দে্ওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা। বিস্ফোরণের পর উল্লাস করার প্রমাণ মিলেছে। এই নিয়ে গোয়েন্দারা জৈশের ওই দাবি খতিয়ে দেখছে।
দূতাবাসের সামনে এনএসজি কম্যান্ডোদের মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা বিস্ফোরকের চরিত্র পরীক্ষা করে দেখছে। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরকের ব্যাটারি উদ্ধার করেছে দিল্লি পুলিশ। তাদের দাবি, উদ্ধার হওয়া ব্যাটারি্ থেকে এটা স্পষ্ট যে বিস্ফোরণ ঘটাতে টাইমার ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের পর ম্যানুয়াল ট্রাকিংয়ে পাশাপাশি টেকনিক্যাল সার্ভেলেন্স শুরু করা হয়। বিশ্বজুড়ে জঙ্গিরা যেসব চ্যানেলে কথা বলে সেইসব জায়গায় ঢোকার চেষ্টা করে দেশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। দেখা যায় টেলিগ্রামে একটি চ্যানেল খোলা হয়। আজ সকাল ৬টা ০৪ মিনিটে ওই চ্যানেলে একটি পোস্ট করে জৈশ–উল–হিন্দ। সেটি দুনিয়ার বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন শেয়ার করা হয়। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ওই অ্যাকাউন্টটি ডিলিটও করে দেওয়া হয়।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনস্থলে ফরেনসিক তদন্তের পর উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিস্ফোরণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়েছে। আইইডি–তে আরডিএক্স থাকলে বিস্ফোরণে আরও বেশি ক্ষতি হতে পারত। স্প্লিন্টার হিসেবে বোমাটিতে ছিল বল বিয়ারিং। বিস্ফোরণস্থলের অদূরেই একটি ক্যামেরা, আধপোড়া লাল রঙের স্কার্ফ ও একটি চিঠি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থলে ২ সন্দেহভাজনকে নামিয়ে দিতে দেখা যায় একটি গাড়িকে। তারা গাড়ি থেকে নেমে বিস্ফোরণস্থলের দিকে এগিয়ে যায়। ওই গাড়িটি ও তার চালককে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গাড়ির দুই আরোহীর স্কেচ আঁকা হচ্ছে।
