চার বছর ধরে মামলা চলার পর পুরুলিয়ার সূচ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সনাতন গোস্বামী ওরফে ঠাকুর ও মঙ্গলা গোস্বামীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। স্বামীর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে খোদ মা তার সন্তানকে খুন করায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সিদ্ধান্ত নিলেন পুরুলিয়া আদালতের বিচারপতি।
স্বামী-স্ত্রী দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল পুরুলিয়া জেলা আদালত। আদালতের দ্বিতীয় কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রমেশকুমার প্রধান অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। সাজা ঘোষণা করা হল আজ, মঙ্গলবার। শুনানিতে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট মা হয়েও নৃশংসভাবে মঙ্গলা গোস্বামী মেয়েকে খুন করেছে। কিন্তু সন্তান তো মায়ের কাছেই সবচেয়ে নিরাপদ। তারপরও এমন ঘটনা সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিশুটিকে তিলে তিলে খুন করতে সাহায্য করেছিল মঙ্গলা। তাই চূড়ান্ত শাস্তির রায় দিতে একটা দিন বেশি সময় চেয়েছিলেন বিচারক। আর আজ মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করল পুরুলিয়া আদালত।
সাড়ে তিন বছরের শিশু কন্যাকে তারা শরীরে সূচ ফুটিয়ে খুন করেছিল। ওই শিশু কন্যা মঙ্গলার সন্তান। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় সনাতনকে বিয়ে করেছিল মঙ্গলা। কিন্তু সংসারে ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়ায় ওই সাড়ে তিন বছরের শিশু কন্যা। তাই তারা দু’জনে মিলে ওই শিশু কন্যাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করতে শরীরে সাত-সাতটি সূচ ঢুকিয়ে দিয়েছিল। পায়ুদ্বারে একটি ও পেটের দু’পাশে ছ’টি সূচ ঢুকিয়ে তারা ওই শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের জুলাই মাসের এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। পুরুলিয়া আদালত সূত্রে জানা যায়, এই মামলায় মোট ৪৪ জন সাক্ষী দেন। অভিযোগের ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেওয়ার পর ওই বছরের ২৪ অক্টোবর মামলা শুরু হয়। এই ঘটনায় অসুস্থ ওই শিশুকে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওই শিশু কন্যার শরীর থেকে সাতটি সূচ বের হওয়ার পরেও তাকে বাঁচানো যায়নি। ২২ জুলাই রাতে এসএসকেএমে তার মৃত্যু হয়। তারপরেই তার মা মঙ্গলা ও সনাতন গোস্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।