দেশ লিড নিউজ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আতঙ্ক বাড়াচ্ছে উপকূলে

ঘূর্ণিঝড় যশ, পূর্ণিমা, সুপারমুন, ব্লাড মুন, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ এবং ভরা কোটাল। সবটাই একইদিনে। ফলে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে দুর্বল নদীবাঁধ আতঙ্ক বাড়ছে সুন্দরবন সংলগ্ন দুই ২৪ পরগনায়। ফিরে আসছে আইলার দুঃসহ স্মৃতি। ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস–এ পরিণত হয়েছে। ক্রমশ সেটি উত্তর–উত্তর পশ্চিম অভিমুখে অগ্রসর হয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে আছড়ে পড়বে ওড়িশার বালাসোর উপকূলে। রাজ্যে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়তে পারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।
উপকূল অতিক্রম করার সময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫৫–১৬৫ কিমি হতে পারে। বজ্রমেঘের কারণে এদিন কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। ভরা কোটাল আসার প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ আরম্ভ হওয়ার কথা। তাই ঘূর্ণিঝড় আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। বৃহস্পতিবার নদীবাঁধ ভাঙার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর এবং ওড়িশার বালাসোর, ভদ্রক, জগৎসিংপুর ও কেন্দ্রাপাড়া জেলার উপর। স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার পর ইয়াস চলে যাবে ঝাড়খণ্ডের দিকে। তাই দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি–সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতে বুধবার অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথের যে উপবৃত্তকার নকশা তৈরি করেছে, তাতে কলকাতা নেই। তবে কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতে বুধবার ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিমি গতিবেগে ঝড় হতে পারে। দুই ২৪ পরগনার জেলার উপকূলবর্তী এলাকায় তার বেগ হবে ৯০ থেকে ১০০ কিমি।
উল্লেখ্য, আইলার সময়ও ভরা কোটাল ছিল। তাই নদীবাঁধের উপর তার প্রভাব ছিল অত্যন্ত বেশি। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির মধ্যেই সর্বোচ্চ প্রভাবে পৌঁছবে ভরা কোটাল। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৭ কিমি দুর্বল নদীবাঁধ রয়েছে। আবার বসিরহাট মহকুমায় প্রায় ৭৬২.৫ কিমির মধ্যে মাত্র ৭৩ কিমি বাঁধ কংক্রিটের। তাই গত সপ্তাহেই পরিদর্শন করে শতাধিক দুর্বল অংশ চিহ্নিত করা হয়েছিল।