দেশ

পুলিশের অত্যাচারে বিষ খেলেন দলিত দম্পতি!‌

দেশের মানুষ খেতে পাচ্ছে না। করোনার জেরে লকডাউনে কলকারখানা বন্ধ। তার জেরে বেকার হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকরা বুলডোজার চালিয়ে ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে। এই আঘাত সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক দলিত দম্পতি। এমনকী স্বামী–স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে পুলিশকর্মীরা তাঁদের বেধড়ক মেরেছেন। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল।
জানা গিয়েছে, রামকুমার আহিরওয়ার (৩৮) আর তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী দেবী (৩৫) বেঁচে গিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের গুনায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। চাপে পড়ে গুনার জেলাশাসক আর পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। এই ঘটনায় হইহই পড়ে গিয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে গুনা জেলায় ২০ বিঘা সরকারি জমিতে কলেজ গড়ে তোলার কাজ চলছে। তার একটি অংশে চাষ করতেন রামকুমার–সাবিত্রী। পাশেই ছিল তাঁদের ছোট্ট একটি ঘর। তিন সন্তান রয়েছে এই দলিত দম্পতির। তাঁদের তুলতে সেখানে যান সরকারি আধিকারিক ও পুলিশকর্মীরা। সঙ্গে ছিল বুলডোজার। তা দিয়েই চাষের জমির ফসল লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘর ভাঙতে এগোলে আটকানোর চেষ্টা করেন রামকুমার এবং সাবিত্রী। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, তাঁদের উপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করছে পুলিশ। তারপরই ঘরে গিয়ে কীটনাশক নিয়ে আসেন সাবিত্রী। একটি শিশি ধরিয়ে দেন স্বামীর হাতে একটি ছিল তাঁর হাতে। পুলিশের সামনেই কীটনাশক খেয়ে নেন তাঁরা। সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে শুয়ে সাবিত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‌আমরা জানি না ওটা কার জমি। আমরা ওই জমিতে বহু বছর ধরে চাষ করছি। ওরা আমাদের ফসল নষ্ট করে দিচ্ছিল। আমরা আটকাতে পারিনি। তাই আমাদের নিজেদের মেরে ফেলা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’‌ এই দম্পতির ৩ লক্ষ টাকার দেনা রয়েছে। সাবিত্রীর প্রশ্ন, সরকার কি আমাদের এই দেনা মিটিয়ে দেবে?
যদিও পুলিশের কোনও দোষ দেখেননি গুনার জেলাশাসক এস বিশ্বনাথ। তিনি বলেন, ‘‌আমরা ফুটেজে দেখেছি পুলিশ কোনও ভুল কাজ করেনি। ওই দম্পতি সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছিলেন। আচমকা বিষ খেয়ে নেওয়ার পর পুলিশই তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তা না হলে ওই দম্পতি ওখানেই মারা যেত, আর তাতে সমস্যা আরও বাড়ত।’‌ এই ঘটনায় চাপে পড়ে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় শিবরাজ সিং চৌহান সরকার। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।