করোনা অতিমারী পরিস্থিতির জন্য এমনিতেই পর্যটন শিল্পের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। গত বছর কড়াকড়ি ও লকডাউনের জেরে কোনও পর্যটন কেন্দ্রেই জন সমাগম হয়নি। আনলক পড়বে গুটি গুটি পায়ে অনেকেই বেরিয়েছিলেন ঘুরতে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ফের বেসামাল পর্যটন শিল্প। গত মাসে দিঘা তারাপীঠ দার্জিলিং সহ রাজ্যের বিভিন্ন জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। মূলত যাত্রাকালের ৭২ ঘন্টা আগের করোনার আরটি-পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট বা করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া থাকলেই মিলছিল হোটেল ভাড়া। আবার স্থানীয় প্রশাসন কড়া নজরদারি চালাচ্ছিল হোটেলগুলোতে। এর জেরে দিঘা, মন্দারমনি, তারাপীঠ বা শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের আনাগোনা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
একই পরিস্থিতি জঙ্গলমহলে বা পুরুলিয়ায়। ফলে ফের পর্যটন শিল্পে আশঙ্কার কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছিল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছিলেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের পর্যটন দফতর কিছুটা নরম হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন করে আর লাগবে না আরটি-পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট বা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের শংসাপত্র। এবার থেকে করোনার র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হলেই রাজ্যের যে কোনও পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে৷
তারাপীঠ, দিঘা, বকখালি থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশের জন্য পর্যটকদের করোনার আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হচ্ছিল৷ সংক্রমণ রুখতেই স্থানীয় প্রশাসন এই নির্দেশিকাগুলি জারি করেছিল আলাদা আলাদা ভাবে। ফলে মাথায় হাত পড়েছিল হোটেল মালিক থেকে শুরু করে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলের। মূলত, দিঘা, মন্দারমনির হোটেল বন্ধ করে দেওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছিল। অনেক জায়গায় পুলিশি অভিযানে পর্যটকরা নাজেহাল হয়েছেন। ফলে কার্যত পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছিল দিঘা থেকে দার্জিলিং। এই পরিস্থিতিতে পর্যটন ব্যবসায়ী এবং হোটেল, লজ মালিকদের ক্ষতি আরও বাড়ছিল৷ তাঁরাই দাবি করেছিলেন, র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ভিত্তিতেই পর্যটকদের আসার অনুমতি দেওয়া হোক৷ কারণ সেই রিপোর্ট ততক্ষণাৎ পাওয়া যায় এবং খরচও অনেক কম৷ কারণ আরটি-পিসিআর টেস্টের খরচ অনেক।
ফলে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগেই হাজার হাজার টাকা খরচ করতে নারাজ অনেকেই। এবার পর্যটন ব্যবসায়ীদের এই দাবিকে মাথায় রেখেই কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করল রাজ্য পর্যটন দফতর৷ পর্যটন সচিবের পাঠানো একটি চিঠিতেই বলা হয়েছে, পর্যটন ব্যবসাকে ঘুরে দাঁড় করাতেই এই নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে এবার থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ভিত্তিতেই পর্যটকদের হোটেলে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে।
You must be logged in to post a comment.