সরকার আর সাধারণের মধ্যে শুরু হয়েছে জোর স্নায়ুর লড়াই। ইস্যু, করোনার সংক্রমণ। আগামী তিন মাস করোনা রুখতে প্রত্যেককে বিশেষ সতর্কতা নিতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই মত ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু উৎসবের প্রাক্কালে মানুষও আর কিছুতেই চার দেওয়ালের আড়ালে আটকে থাকতে চাইছেন না। ২০২০ সালের মার্চ থেকে প্রথমে লকডাউনে বন্দি, তারপরেও টানা কড়া কোভিড-বিধি পালনের জেরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের অধিকাংশই। বেড়াতে যাবই। ভ্যাকসিন হয়ে গিয়েছে, সংক্রমণের হারও কম। মল, সিনেমা হল, বাজার খুলে গিয়েছে।
গোটা দেশে ২২ হাজার ৪৩১ জন কোভিডে আক্রান্ত। সার্বিকভাবে গোটা দেশে সংক্রমণে পজিটিভিটির হার ১.৬৮% হলেও কেরল, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং মিজোরাম কেন্দ্রের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। মিজোরামে সাপ্তাহিক পজিটিভিটির হার ২১.৬৪%। কেরলে ১৩.৭২%। দেশের ৩৪টি জেলায় পজিটিভিটির হার এখনও ১০ শতাংশের বেশি।
তাই রিভেঞ্জ নয়, উৎসবের মরশুমে ‘রেসপন্সবল ট্রাভেলে’র পরামর্শ দিচ্ছে কেন্দ্র। বলরাম ভার্গব, সমীরণ পাণ্ডা, সন্দীপ মণ্ডলের মতো আইসিএমআরের তিন বিজ্ঞানী এবং লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের নিমালন আরিনামিপ্যাথি মিলে তৈরি করেছেন গবেষণাপত্র। যেখানে আচমকা নানা অনুষ্ঠানকে ঘিরে হঠাৎ ভিড় বাড়লে কীভাবে হতে পারে কোভিডের সংক্রমণ বৃদ্ধি, তা বিস্তারিত দেখানো হয়েছে। দার্জিলিং, মানালির মতো পরিচিত পর্যটনস্থলের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এই সব জায়গা এমনিতে ফাঁকা ফাঁকা হলেও পর্যটকের উপস্থিতিতেই আচমকা ভিড় বাড়ে।
তাই একান্ত প্রয়োজন না হলে যেমন বেড়ানো বন্ধ রাখার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে শুকনো কাশি, স্বাদ-গন্ধ গায়েবের মতো সামান্য কোভিডের উপসর্গও দেখা যায়, তাহলে বেড়াতে যাওয়া স্থগিত রাখুন। প্রত্যেক পর্যটককে বাধ্যতামূলকভাবে যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এবং অবশ্যই ঘোরাঘুরির সময় মাস্ক সহ কোভিড বিধি মেনে চলুন। এটিই হবে দায়িত্বপূর্ণ ট্রাভেল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকেও বৃহস্পতিবার বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলনে বারবার বলা হল, অনুগ্রহ করে অক্টোবর-ডিসেম্বর, এই তিন মাস অত্যন্ত সতর্কে থাকুন। ঘরে বসে অনলাইনেই উৎসবে শামিল হন। দেবী দুর্গা যেভাবে অসুর বধ করেছিলেন, রামচন্দ্র রাবণকে, একইভাবে এবারের উৎসব পর্বে করোনা বধের টার্গেট নিন বলেই মন্তব্য করেছেন মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল। তিনি বলেন, উৎসবে আনন্দ ভাগাভাগি করুন, করোনা নয়।