মারণ ভাইরাস করোনার ত্রাসে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। কোন ওষুধে চিকিৎসা সম্ভব? বিশ্বজুড়ে তার গবেষণা চলছে। করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টায় পরীক্ষাগারে দিন রাত এক করে একের পর এক পরীক্ষা করে চলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস হয়তো কোনওদিনই পুরোপুরি বিদায় নেবে না। এমনকী সারা বিশ্বের মানুষকে এই ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে। এমনই আশঙ্কার কথা জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছে, ‘এই ভাইরাস কখনও বিনাশ নাও হতে পারে। এইচআইভি’র মতো করোনাও কখনও নাও যেতে পারে।’ মাইকেল রায়ান নামে বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থার এক আধিকারিক বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের উপর থাকতে পারে এই করোনাভাইরাস। কবে এই ভাইরাসের ওপরে আমরা জয়লাভ করব সেটা অনুমান করা এখনই খুব কঠিন।’
তিনি আরও জানান, এখনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। ভ্যাকসিন ছাড়া এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। কারণ সারা বিশ্বের মানুষের শরীরে যথোপযুক্ত ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরি হতে কয়েক বছর সময় লাগবে। উল্লেখ্য, দীর্ঘ লকডাউনের পর বেশ কিছু দেশ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে। স্পেন, ইতালি, জার্মানি নিষেধাজ্ঞা অনেকটাই হালকা করেছে। চিনের উহানে নতুন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেলেও এখনও দ্বিতীয় কোনও লকডাউনের সম্ভাবনা দেখছে না চিন প্রশাসন। বরং উহানের পর্যটনস্থল কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ঘোষণার পথে হেঁটেছে বিশ্বের অনেক দেশ। লকডাউনের ফলে সংক্রমণ কিছু মাত্রায় রোখা সম্ভব হলেও, লকডাউনের ফলে মানুষের জীবন–জীবিকায় টান পড়েছে। করোনার জেরে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আর্থিক মন্দা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই অর্থনীতির বিশাল ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে অনেকে মনে করছেন লকডাউন শিথিল করলে করোনাভাইরাসের ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ আসতে পারে। তবে মাইকেল রায়ান জানান, এমনটা যে হবেই তার কোনও মানে নেই। এই ভাইরাস অঞ্চলভিত্তিক একটি ভাইরাসের রূপ নিয়ে মানবজাতিতে থেকে যেতে পারে। এই ভাইরাস হয়তো নির্মূল হবে না। এইচআইভি ভাইরাসও নির্মূল যায়নি। কিন্তু আমরা সেটাকে সঙ্গে নিয়েই চলছি।