দেশ লিড নিউজ

করোনামুক্ত লাক্ষাদ্বীপে খুলল স্কুল, খুশির হাওয়া

রাস্তা দেখাল লাক্ষাদ্বীপ। গোটা দেশ যখন করোনার থাবায় বেসামাল তখন একমাত্র লাক্ষাদ্বীপই নজির তৈরি করল। এখনও পর্যন্ত এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি পুরোপুরি করোনাহীন। করোনাকে ঠেকিয়ে রাখার পর এবার প্রাথমিকের স্কুলও খুলে গেল সেখানে। যা এককথায় চমকপ্রদ। ভারতের অন্যান্য জায়গায় এই নজির দেখা তো দূরঅস্ত, বরং দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় এগিয়ে চলেছে ভারত।
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের ক্লাস শুরু হয়েছে লাক্ষাদ্বীপে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুল শুরু করেছে। যেখানে বাংলায় তথা অন্যান্য রাজ্যে প্রাথমিক এখনও বন্ধই রয়েছে। দীর্ঘদিন অনলাইনে ক্লাস করার পর, পুরনো বন্ধুদের দেখে শিশুদের আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো। পড়ুয়াদের স্বাগত জানিয়ে প্রবল খুশি শিক্ষক–শিক্ষিকারাও। বড়দের ক্লাস কয়েকদিন আগেই শুরু হয়েছিল। এবার শুরু হল কচি–কাঁচাদের পঠনপাঠনও।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং শিক্ষক–অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকের পরে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক দীনেশ্বর শর্মা। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর, লাক্ষাদ্বীপে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়ে যায়। সেখানে নিউ নর্ম্যাল পরিবেশ অনেক আগে থেকেই তৈরি হওয়ায় খুশির হাওয়া সর্বত্র। লাক্ষাদ্বীপ অঞ্চলে মোট ১০টি দ্বীপে মানুষের বসবাস। এখানে মোট ১১ হাজার পড়ুয়া ফের স্কুল শুরু করেছে। তবে এখনও প্রাক–প্রাথমিক পর্যায়ের স্কুলগুলির খোলার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
আমিনি দ্বীপের সরকারি স্কুলের এক শিক্ষক জানান, প্রথম দিনেই ক্লাস ১ থেকে ৫ ১২৬ জন পড়ুয়া স্কুলে এসেছে। স্কুলের গেটে থার্মাল স্ক্রিনিং হচ্ছে। সবাইকে মাস্ক পরে থাকতে হচ্ছে। ক্লাসরুমে প্রবেশ করার আগে সবাইকে হাত ধুতে হচ্ছে। একটা বেঞ্চে দু’জন করে পড়ুয়া বসছে। প্রতি সোমবার, বুধবার এবং শুক্রবার প্রথম, তৃতীয় এবং পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে। মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার এবং শনিবার হচ্ছে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস।
উল্লেখ্য, ৬৪ হাজার জনসংখ্যার লাক্ষাদ্বীপে করোনা প্রবেশ করতে পারেনি প্রশাসনের কড়া নজরদারির জন্য। মার্চের শেষ সপ্তাহে গোটা দেশ লকডাউনে গিয়েছিল। কিন্তু তার বেশ কিছুদিন আগেই এই দ্বীপে পর্যটকদের প্রবেশের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। যাঁরা কাজের সূত্রে দেশের অন্য প্রান্তে গিয়েছেন, তাঁদের কোভিড–নেগেটিভ শংসাপত্র থাকলেই লাক্ষাদ্বীপে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। এইসব কারণের জন্যই লাক্ষাদ্বীপকে করোনাহীন রাখা গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।