‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনের টিকিটের ভাড়া নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই ট্রেনে ফেরার জন্য খরচ শ্রমিকদেরই দিতে হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিখরচায় ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব নিল কংগ্রেস। সোমবার সকালে চিঠি দিয়ে এই কথা জানালেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তারপরই প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী জানান, ভিন রাজ্যে আটকে থাকা অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার খরচ জোগাবে কংগ্রেস। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর সমস্ত খরচ দেবে কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রতিটি রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেসকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে সোনিয়া বলেন, ‘অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্যে ফেরার ভাড়ার টাকা জোগাবে সেই রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি। তার জন্য সরকারের ওপরে ভরসা করতে হবে না। এটা সহ–নাগরিকদের প্রতি কংগ্রেসের কর্তব্য। আমরা ওদের সহানুভুতি জানাই।’ সোনিয়ার এই সিদ্ধান্ত কার্যত মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ লকডাউন সারাজীবন চলবে না। এটা উঠে স্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে কংগ্রেসের এই অবদান মনে রাখবেন খেটে খাওয়া মানুষজন। যার ফল দেখতে পাওয়া যাবে ভোটবাক্সে।
শুক্রবার রেল মন্ত্রক পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য বিশেষ ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করে। রবিবার ‘শ্রমিক স্পেশাল’ সেই ট্রেনের ভাড়া ঘোষণা করে রেল। বেস ফেয়ারের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫০ টাকা চার্জ ঘোষণা করে রেল। এই বর্ধিত ভাড়া ঘোষণায় কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তাঁর কথায়, শ্রমিকরাই এই দেশের মেরুদণ্ড। ওঁদের পরিশ্রম আর আত্মত্যাগই দেশ নির্মাণের ভিত্তি। ১৯৪৭ দেশভাগের পর কোনওদিন শ্রমিকদের এভাবে দুর্দশায় পড়তে হয়নি। শ্রমিকরাই দেশের মূল চালিকাশক্তি। মাত্র ৪ ঘণ্টা আগে লকডাউনের ঘোষণায় দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েছেন কয়েক লক্ষ্য শ্রমিক। স্বাধীনতার পর এই প্রথমবার মানুষকে পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরতে হচ্ছে। খাবার, ওষুধ, টাকা কিছুই নেই তাঁদের হাতে।
বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের বিনামূল্যে বিমানে উড়িয়ে দেশে ফিরিয়ে আনছে ভারত সরকার। প্রধানমন্ত্রীর করোনা তহবিলে ১৫১ কোটি টাকা দান করছে রেল মন্ত্রক। সেখানে অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য ট্রেনের ভাড়া ঘোষণা করা হচ্ছে! বর্ধিত মাসুল ধার্য করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে সোনিয়া বলেন, ‘সরকার যখন এত টাকা খরচ করে ভিনদেশে আটকে থাকা নাগরিকদের ফেরাতে পেরেছে, ১০০ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে গুজরাতের একটা অনুষ্ঠানের জন্য (নমস্তে ট্রাম্প), তখন আমাদের দেশের সব চেয়ে জরুরি নাগরিকদের ন্যূনতম সৌজন্য দেখানো হয় না।’ চাপে পরে দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে কেন্দ্র,বাধ্য হয়ে রেল মন্ত্রক ঘোষণা করে ভাড়ার ৮৫% দেবে রেল বাকি ১৫% ইচ্ছা করলে যে রাজ্যের শ্রমিক সেই রাজ্য দিতে পারে।
