প্রয়াত বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার রাত ১টা ৫০ মিনিট নাগাদ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুরনো পেসমেকার বদল করার জন্য নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন সোমেনবাবু। ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেশি হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ডায়ালিসিস করতে হচ্ছিল। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে তাঁর অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে গত বেশ কয়েকদিন ভর্তি ছিলেন শহরের বেসরকারি হাসপাতালে। তবে দুদিন আগেই তাঁর ছেলে সাংবাদিকদের জানান, তাঁর বাবা চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। হঠাৎ বুধবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। সোমেনবাবুর পরিবার সূত্রের বক্তব্য, বুধবার সকালের দিকে শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। রাতেই প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইট করে সভাপতির প্রয়াণের কথা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ থেকে ২০০৬ সাল শিয়ালদহ আসন থেকে একাধিকবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। ২০০৮ সাল প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গঠন করেন। ২০০৯ সাল ইন্দিরা কংগ্রেস যুক্ত হয় তৃণমূলের সঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে ২০০৯ সালে সোমেন মিত্র ডায়মণ্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদও হন। ২০১৪ সালে ফের কংগ্রেসে ফেরা। এদিন তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই হাসপাতালে পৌঁছন কংগ্রেস নেতারা। হাসপাতালেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী শিখা মিত্র। গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংও।
দক্ষিণ কলকাতার নার্সিং হোমে থাকাকালীন সোমেনবাবুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত রবিবার ফোন করে সোমেনবাবুর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ফুল পাঠিয়ে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেন। সোমেনবাবুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন অধীর চৌধুরী। সোমেনবাবুর মৃত্যুতে টুইটে শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর মৃত্যুতে বাংলার রাজনীতিতে একটি অধ্যায় শেষ হল।
দলীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ বেলভিউ হাসপাতাল থেকে বিধানভবন নিয়ে যাওয়া হয় সোমেন মিত্রর মরদেহ। দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিধানভবনে রাখা হবে দেহ। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বিধানসভায়। সেখানে দেড়টা পর্যন্ত তাঁর দেহ রাখা হবে। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন বিধায়করা। বিধানসভা থেকে ফের ৩ নম্বর লোয়ার রডন স্ট্রিটের নিজ বাসভবন নিয়ে যাওয়া হবে। নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
