আর দু’সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন দিনক্ষণও ঘোষণা করে দেবে। তারই মধ্যে পুদুচেরিতে বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। একের পর এক বিধায়কের ইস্তফার জেরে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতেও সংখ্যালঘু হয়ে গেল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। পরিস্থিতি এই যে, ভোটের কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করতে হতে পারে মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীকে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরির মোট বিধায়ক সংখ্যা ৩০। মঙ্গলবার জন কুমার নামে এক বিধায়ক পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়াল ১০। সমর্থন রয়েছে ৩ ডিএমকে এবং এক নির্দল বিধায়কের। তাই বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল কংগ্রেস।
এই মুহূর্তে গোটা দেশের মাত্র চার রাজ্যে আছেন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যেই একটি ছিল পুদুচেরি। ২০১৬ নির্বাচনে ৩০ আসনের পুদুচেরি বিধানসভায় ১৫টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। তখন জোটসঙ্গী ডিএমকের দুই বিধায়ক এবং এক নির্দল বিধায়কের সমর্থনে সরকার গড়ে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন ভি নারায়ণস্বামী। বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া এন আর কংগ্রেস পায় ৮টি আসন। এআইএডিএমকে জেতে ৪টি আসন। এমনিতে পুদুচেরিতে কোনওক্রমে সরকার চালাচ্ছিল কংগ্রেস। কিন্তু মঙ্গলবার একসঙ্গে একাধিক বিধায়কের ইস্তফায় সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলেছে।
এখনও পর্যন্ত দুই মন্ত্রী এ নমশিবায়ম, মল্লাদি কৃষ্ণ রাও এবং দুই বিধায়ক ই থেপ্পেইনথন এবং জন কুমার কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। এঁদের মধ্যে নমশিবায়ম এবং থেপ্পেইনথন ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আরও এক কংগ্রেস বিধায়ক এ ধনভেলু দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কৃত হন। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে পুদুচেরির শাসক এবং বিরোধী পক্ষে ১৪ জন করে সদস্য রয়েছেন। এর আগে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর গত সোমবার বিধায়কপদ থেকে পদত্যাগ করেন কৃষ্ণ রাও।
বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণস্বামী। সূত্রের খবর, এই বৈঠক শেষে সরকার ভেঙে দিয়ে পদত্যাগও করতে পারেন তিনি। নির্বাচনের আগে যা কিনা বড় ধাক্কা হবে কংগ্রেসের জন্য। সামনেই পুদুচেরিতে ভোটপ্রচারে যাওয়ার কথা রাহুল গান্ধীর। তার ঠিক আগেই বিধায়কদের এই পদত্যাগ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস শিবিরের। এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে এতদিন পর্যন্ত সেভাবে প্রভাব ছিল না বিজেপির। কিন্তু ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতেও নজর পড়ে গেরুয়া শিবিরের। উপরাজ্যপাল হিসেবে সেখানে পাঠানো হয় কিরণ বেদীকে। তারপর থেকেই পুদুচেরি বারবার শিরোনামে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী–উপরাজ্যপাল বিবাদের কারণে। ভোট না হওয়া পর্যন্ত কংগ্রেস পুদুচেরিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।
