রাজ্য

ভারতীর বিরুদ্ধে তদন্তে সিআইডি

দাসপুর তোলাবাজি মামলায় বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ এবং এক প্রাক্তন ওসি সিআইডি’র সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যেতে চায় সিআইডি। এই মামলায় ব্যবসায়ী বিমল ঘড়াইয়ের বিরুদ্ধে ঘাটাল আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে জানিয়েছে সিআইডি। আদালত সূত্রে এই খবর মিলেছে। ভারতীর বিরুদ্ধে তদন্ত জারি রেখে তাঁর উপর চাপ বজায় রাখার চেষ্টা করল সিআইডি বলে মনে করা হচ্ছে।
আদালত সূত্রে খবর, সিআইডি চার্জশিটে বলেছে, দাসপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী খোকন খাঁ অভিযোগ করেছেন, নোটবন্দির পর তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার সোনা নিয়ে যান আরেক ব্যবসায়ী বিমল ঘড়াই। তাঁর দাবি, বিনিময়ে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। পুরোটাই নতুন নোটের বান্ডিল। কিন্তু ওই টাকা তিনি যে পাননি, তা তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে। চার্জশিটে বলা হয়েছে, গোটা চক্রে একাধিক পুলিশ অফিসারের নাম জড়িয়ে পড়েছে। আর বিমলবাবু যখন ব্যবসায়ীদের সোনার বিনিময়ে নতুন ২ হাজার ও ৫০০ টাকার নোট দেওয়ার গল্প শুনিয়ে সোনা আদায় করেছিলেন, তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী ঘোষ।
চার্জশিটে সিআইডি’র দাবি, তাঁর নির্দেশেই গোটা বিষয়টি করা হয়েছে। খোকনবাবুর অভিযোগে ভারতীর নাম রয়েছে (দাসপুর কেস ৩০)। চার্জশিটে বলা হয়েছে, বিমলের সঙ্গে ওই জেলার একাধিক পুলিশ কর্তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাঁদের নির্দেশেই এই স্কিমের গল্প শুনিয়ে সোনা আদায় করেছিলেন তিনি। বিমল ঘড়াই এই ষড়যন্ত্রে জড়িত। যে সমস্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ী এভাবে সোনা দিতে নিমরাজি ছিলেন, তাঁদের থেকে জোর করে সোনা নেওয়া হয়েছে। তার প্রমাণ মিলেছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানও মিলে যাচ্ছে। বিমল গ্রেপ্তার হওয়ার পর জেরায় জানান, এর পিছনে ভারতীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। তিনি গোটা স্কিমের পরিকল্পনা করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর নির্দেশেই জোর করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সোনা আদায় করা হয়েছিল বলে বিমলের অভিযোগ। একথা চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিআইডি। এই ঘটনায় প্রাক্তন ওসি প্রদীপ রথ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সোনা সংগ্রহ করতে বলেছিলেন বিমলকে। আসলে সোনার আড়ালে কালো টাকা সাদা করাই উদ্দেশ্য ছিল। বিমল ভারতীকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে বর্ণনা করায় ওই প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে ক্লিনচিট দিতে পারেনি সিআইডি।
ভারতী ঘোষ এই ঘটনায় সত্যি জড়িত কি না, তার স্বপক্ষে প্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে। তাই তাঁকে সন্দেহের তালিকায় রাখছেন সিআইডি’র অফিসাররা। এই মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট যাতে সিআইডি দিতে পারে, তার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।