ভারত-চিন বিবাদের প্রভাব দু’দেশের কূটনৈতিক, রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক পরিসীমায় আবদ্ধ নেই। জাতীয় স্বার্থে বিনোদন তারকারাও সোচ্চার হয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে নায়ক জিৎ ফিরিয়ে দিয়েছেন একটি সম্মাননা, যার স্পন্সর হিসেবে একটি চিনা কোম্পানি যুক্ত আছে। চিনের বিরুদ্ধে অভিনেতা জিৎ এবার গর্জে উঠলেন। তবে তার নিজস্ব ভঙ্গীতে।
‘সীমান্তে গিয়ে লড়তে না পারলেও নিজের দেশের জন্য এটুকু তো করাই যায়!’ মন্তব্য করেন টলিউড অভিনেতা।
ক’দিন আগেই চিনা অ্যাপ টিকটককে নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিনেত্রী-সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান। পাশাপাশি তৃণমূলের যুবশক্তির রাজ্য কো-অর্ডিনেটর তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীরও মন্তব্য ছিল, ‘অ্যাপ নিষিদ্ধ করলে তো আর শহীদরা ফিরে আসবেন না!’ চিনের প্রতি নরম সুরের পেছনে মূলত টিকটকে নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থই এই মন্তব্যের কারণ বলে মনে করছেন সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। তবে নুসরাত-সোহমের থেকে একেবারে উল্টো পথে হেঁটে দেশপ্রেমের নজির স্থাপন করেছেন টলিউড সুপারস্টার জিৎ মদনানি। সংস্থার নামোল্লেখ না করেই অভিনেতা পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছেন। দিন কয়েক আগে এক সংস্থা চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের জন্য ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেখানেই দর্শকের বিচারে জিৎ সেরা অভিনেতার শিরোপা জেতেন। কিন্তু ভারত-চিন সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি অভিনেতাকে ভাবিয়ে তুলেছে। সম্প্রতি লাদাখে ইন্দো-চিন সংঘর্ষে শহীদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সামাজিকমাধ্যমে একটি পোস্ট করে জিৎ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার দেওয়া পুরস্কার তিনি গ্রহণ করতে পারবেন না।
অভিনেতা জিতের মন্তব্য, ‘যে সমস্ত দর্শক আমাকে ভোট দিয়েছেন, যারা আমাকে ভালবাসেন, তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। পুরস্কার পেতে কার না ভাল লাগে বলুন! পরিবারের সদস্যরা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাই খুশিও হয়। বিশেষ করে বাড়ির বাচ্চারা ট্রফি দেখলেই আনন্দ পায়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দেওয়া পুরস্কার গ্রহণ করতে কিছুতেই আমার মন সায় দিচ্ছে না!’ আপত্তিটা ঠিক কোন কারণে? এপ্রসঙ্গে অভিনেতা পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘অনেকেই হয়তো জানেন না যে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সঙ্গে একটি চিনা কোম্পানি যুক্ত রয়েছে। আমার ব্যক্তিগতভাবে কারও সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের দেশের সঙ্গে চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভাল নয়। চিনের আগ্রাসী মনোভাবের জন্যই শহীদ হতে হয়েছে আমাদের দেশের জওয়ানদের। আর এমতাবস্থায় কোনও মতেই আমি এই পুরস্কার নিতে পারব না। সীমান্তে গিয়ে লড়াই না করতে পারলেও নিজের দেশের জন্য তো এটুকু করাই যায়। তাই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলাম।’