রাজ্য

শিশু মৃ্ত্যুতে বিশেষজ্ঞ দলের পরিদর্শন

শুরু হয়েছিল জলপাইগুড়ি থেকে। রহস্যময় জ্বরে আক্রান্তের খবর আসছে সারা রা‌জ্য থেকেই। আক্রান্ত শিশুদের জন্য বেডের আয়োজন করতে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালগুলি হিমশিম খাচ্ছে। জ্বরের কারণ খুঁজে বের করে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তারা। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, জলপাগুড়িতে আক্রান্ত শিশুদের নমুনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি এবং আরএস ভাইরাস ছাড়া কিছু মেলেনি। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ১০টি নমুনার সাতটিতেই আরএস ও একটিতে ইনফ্লুয়েঞ্জা–বি ভাইরাস মিলেছে। শেষ ৭২ ঘণ্টায় এই জ্বরে সাত শিশুর মৃত্যুর খবর এসেছে। তার মধ্যে মালদহ মেডিক্যালের তিন শিশুও রয়েছে।

রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বছর বাচ্চাদের এই জ্বর মোটেই বেশি হয়নি। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে ফি বছরই এমন হয়। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‌জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে ১১৯৫টি শিশু ভর্তি হয়। মোটেই বেশি সংখ্যায় ভর্তি হচ্ছে না। ২০১৭ সালে গোটা সেপ্টেম্বরে ২২৭৯টি, ২০১৮ সালে ২০৪৯ এবং ২০১৯ সালে ২০৮৩টি শিশুকে ভর্তি করা হয়েছিল। জ্বরের ট্রেন্ড খুব অস্বাভাবিক নয়।’‌ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ উত্তরবঙ্গে যাচ্ছে পরিদর্শক দল। আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যকে চিঠি লিখে জলপাইগুড়িতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

শিশুদের চিকিৎসায় বিশেষ নজর রাখতে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। জেলা হাসপাতালে এদিন দু’শতাধিক শিশু আউটডোরে চিকিৎসার জন্য আসে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২টি শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। এখন ভর্তি রয়েছে ১০৫টি শিশু। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩১ জন। রেফার করা হয়েছে চারজনকে।

জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে বিভিন্ন রোগ নিয়ে ৮৬টি শিশু ভর্তি আছে। ২১টি শিশু জ্বরে আক্রান্ত। আক্রান্তদের অযথা আতঙ্কের কারণ নেই। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে শিশুদের জন্য খোলা হচ্ছে ২৪ বেডের রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট। মাতৃমায় ১৫ বেডের পিকু ও আট বেডের এইচডিইউ ইউনিট চালু করা হবে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাত্র সাতজন শিশু ভর্তি রয়েছে। তবে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি শহরের প্রাইভেট চেম্বারগুলিতেও জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের লাইন বেড়ে চলেছে।