জেলা

জঙ্গলমহলে তৃণমূলের মুখ ছত্রধর মাহাত!‌

মাওবাদী নেতা ছত্রধর মাহাতকে মনে আছে?‌ উত্তর একটাই, থাকবে না আবার। লালগড়ে বুদ্ধবাবুর কনভয়ের ওপর হামলার নেপথ্য নায়ক তো তিনিই। তৎকালীন বিরোধী নেত্রীকে তাঁর মোটরবাইকে করে যেতেও দেখা গিয়েছিল। পরে এই মাওবাদী নেতার জেলও হয়। এখন প্রশ্ন উঠছে, ছত্রধর মাহাত কী শাসক তৃণমূলের হয়েই ময়দানে নামবেন? ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই মাওবাদী নেতাকেই তরুপের তাস করা হচ্ছে বলে খবর। তবে গোপীবল্লভপুরের একটি অতিথিশালায় তৃণমূলের পক্ষে সভায় তাঁকে বক্তব্য রাখতে দেখা যাওয়ায় সেই খবরে সিলমোহর পড়ল।
সেই সভায় তিনি বলেন, ‘‌২০১১ সালে বামফ্রন্টকে হারিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে। তার আগের এখানকার ইতিহাস সবারই জানা। বাম জমানার অপশাসনের ফলে তা হয়েছিল। গোপীবল্লভপুর প্রতিবাদের মাটি। অনেক বিপ্লবী এখানে জন্মেছেন। নকশাল আন্দোলন এখানে সংগঠিত হয়েছিল। তৃণমূল অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। মানুষই সব কিছুর পরিবর্তন ঘটাতে পারে। সেই মানুষের উপর ভরসা আছে। এখানে একটি সাম্প্রদায়িক দল জায়গা করছে। আমরা কোনওদিন আশা করিনি এই রাজ্যে তারা ঘাঁটি গাড়বে। তৃণমূল অনেক প্রগতিশীল। এটা সবারই ভাবার দরকার যে, এমন একটা সাম্প্রদায়িক দল সামনে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।’‌
এরপরই তিনি জানান, নব্য তৃণমূল এবং বিধায়ক চূড়ামণিবাবুর মধ্য একটা সংঘাত চলছে। পুরনো মানুষেরা কষ্ট করে পার্টিটাকে ধরে রেখেছে। নতুনেরা তাকে সমৃদ্ধশালী করছে। এলাকায় আগে ঝাড়খন্ডি দলগুলি বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। নয়ের দশকের দিকে তারা ভালমতো প্রভাব বিস্তার করে। তাদের সম্মান দিতে হবে। তাই সবার সঙ্গে সমন্বয় করেই হাঁটলে তবেই ২০১১ সালের গৌরব ফিরে পাব। উল্লেখ্য, এই সভা থেকে এলাকার সাতমা অঞ্চলের ৩০টি পরিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করে। এই ব্যাপারে বিজেপি’‌র ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাত বলেন, ছত্রধর মাহাতকে দিয়ে সুবিধা করতে পারবে না তৃণমূল। আর উনি যেটা বলেছেন, বিজেপি মোটেই সাম্প্রদায়িক দল নয়। কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বে অনেকেই মুসলিম রয়েছেন। বরং সাম্প্রদায়িকতা করছে তৃণমূল। ইমাম ভাতা, ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ, শুধু ভোট ব্যাঙ্কের জন্য।
তবে বছর দুয়েক আগে লালগড়ে একটি সভা শেষ করেই ছত্রধর মাহাতর স্ত্রী মিনতিদেবীর সঙ্গে দেখা করতে যান বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায়। এই খবরে তখন গোটা জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।
সেই পরিস্থিতিতে ছত্রধরকে নিয়ে মুকুলবাবুর সক্রিয়তা নতুন করে ভাবাতে শুরু করে রাজ্য রাজনীতিকে। যদিও এবার তা হচ্ছে না বলেই খবর।