অবশেষে ৭৪ বছর পর এই প্রথম দেশের কোনও অরণ্যে ছাড়া হবে চিতা। শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ বিশেষ কার্গো বিমানে মধ্যপ্রদেশের বায়ুসেনার বিমানঘাঁটিতে এসে পৌঁছায় আট নামিবিয়ান চিতা। এরপর বায়ুসেনার চিনুক হেলিকপ্টারে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কুনোর পালপুর জাতীয় উদ্যানে। অন্যদিকে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মধ্যপ্রদেশের কুনোর পালপুর জাতীয় উদ্যানে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই চিতাগুলিকে ছাড়বেন তিনি।
জানা গিয়েছে, চিতা সংরক্ষণের জন্য যে সমস্ত সুযোগ ও সুবিধা থাকা উচিত, সেই সব ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই করা হয়ে গিয়েছে এই জাতীয় উদ্যানে। প্রথম দফায় নামিবিয়া থেকে ৮টি চিতা আনা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আগামী পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে আরও ৫০টি চিতা ভারতে আনা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই মোদী বিমানে মধ্যপ্রদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এরপর তিনি শেওপুর জেলায় অবস্থিত কুনোর পালপুর জাতীয় উদ্যানে পৌঁছবেন। চিতাগুলিকে পার্কে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অংশও নেবেন তিনি। চিতাগুলিকে জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়ার পর একটি আলোচনা সভায় অংশ নেবেন মোদী।
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরই দেশের শেষ চিতাটির মৃত্যু হয় ছত্তিশগড়ের কোরিয়া জেলায়। সেই সময় ওই অঞ্চলটি মধ্যপ্রদেশের অন্তর্গত ছিল। রামানুজ প্রসাদ সিংহদেওর গুলিতে মারা পড়েছিল ভারতের শেষ চিতাটি। তার পাঁচ বছর পর অর্থাৎ ১৯৫২ সালে ভারতে চিতা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে বলে ঘোষণা করে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর ২০০৯ সালে ভারতে এই পশুটিকে ফিরিয়ে আনার প্রকল্পটি শুরু হয়।
গত বছরের নভেম্বর মাসেই আফ্রিকা থেকে চিতা নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউনের কারণেই তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কুনোর পালপুর জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকরা। এরপর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চিতা আনার জন্য সবুজ সংকেত মেলে সুপ্রিমকোর্ট থেকে। এবছর জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ ঘোষণা করেন যে, ভারতের অরণ্যে আবার ফিরতে চলেছে ৭০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া চিতা।