অবশেষে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল তাঁদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট জমা দিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি লিখে নিজেদের পর্যবেক্ষণ জমা দিলেন দক্ষিণবঙ্গে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্রা। এই রিপোর্টে অপূর্ব চন্দ্রা রাজ্যের তরফে তথ্য গরমিলের অভিযোগ এনেছেন। এমনকী আজ সোমবার দিল্লি ফিরে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় দল। কিন্তু ফিরে যাওয়ার আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে তীব্র অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন তিনি।
তাঁর বক্তব্য, ৩০ এপ্রিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে যে সংখ্যক অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা দেখানো হয়েছিল, কেন্দ্র সরকারকে পাঠানো রিপোর্টে সেই রোগীর সংখ্যা তার থেকে অনেক বেশি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা বুলেটিনে বলা হয়েছে, অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৫৭২। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠানো রিপোর্টে রোগীর সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৯৩১। চিঠিতে মৃতের সংখ্যা নিয়েও তথ্য লুকানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ, দেশের মধ্যে মর্টালিটি রেট সবচেয়ে বেশি পশ্চিমবঙ্গে, ১২.৮ শতাংশ। যা গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই চড়া মৃত্যুর হার স্পষ্ট ইঙ্গিত করছে যে পশ্চিমবঙ্গে টেস্টিং কম হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দু’সপ্তাহ রাজ্যে থেকে দক্ষিণবঙ্গের ৪ জেলা কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনা পরিদর্শন করে এই দলটি। এই চার জেলায় কমবেশি ৫০ লক্ষ মানুষ রয়েছেন। কিন্তু এই ৪ জেলা পরিদর্শনের সময় এত বিশাল সংখ্যক মানুষের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে যা যা গ্রহণ করা উচিত ছিল তা দেখা যায়নি বলে চিঠিতে লিখেছেন অপূর্ব চন্দ্রা। পরিষ্কার ১৮৭টি কেসের তফাৎ হচ্ছে। ৩০ তারিখ বিকেলে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল আরও ৭২ জন কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে যাঁদের মধ্যে কোমর্বিডিটি ছিল। কিন্তু সেই পরিসংখ্যানের প্রতিফলন বুলেটিনে ছিল না।
যাবার আগে টিমের প্রধান তথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষ সচিব অপূর্ব চন্দ্র জানান, আমি আপনাকে সাতটি আর বিভিন্ন দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে ৪টি চিঠি লিখেছি। কোনও জবাব পাইনি। আমাদের এটাই মনে হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় টিমের বিরোধিতা করার মানসিকতা নিয়ে চলেছে। অন্য রাজ্যেও কেন্দ্রীয় টিম গিয়েছে। কোনও রাজ্যে এরকম অভিজ্ঞতা হয়নি।