দেশ লিড নিউজ

কৃষকদের হুমকি দিল কেন্দ্রীয় সরকার

তিনটি নয়া কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। তার জেরেই ছন্দপতন ঘটেছে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন। ট্র‌্যাক্টর মিছিল করতে গিয়ে কৃষকদের একাংশ কার্যত লালকেল্লার দখল নিয়ে নেন। জাতীয় পতাকার ঠিক নীচে তোলা হয় কৃষক আন্দোলনের পতাকা ও ধর্মীয় পতাকাও। সেই ছবি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে অস্বস্তিতে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ পুলিশ তাদের হাতে। সেখানে তারা কৃষকদের রুখতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশজুড়ে এই ছবিই দেখা যায়। তাই এবার সরাসরি কৃষকদের হুমকি দিল কেন্দ্রীয় সরকার বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‌ভারত কখনও জাতীয় পতাকার অপমান মেনে নেবে না। যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের ছেড়ে কথা বলা হবে না।’‌ প্রজাতন্ত্র দিবসে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় দেশের রাজধানীতে। লাগাতার চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনের সূত্র ধরেই ট্র‌্যাক্টর মিছিল থেকে ধুন্ধুমার বাঁধে দিল্লিতে। কৃষক মৃত্যু, লালকেল্লায় প্রতিবাদীদের পৌঁছে যাওয়া, সেখানে পতাকা উড়িয়ে দেওয়া, জলকামান, টিয়ার গ্যাস–বাদ যায়নি কিছুই।
লালকেল্লার মতো ঐতিহাসিক সৌধ প্রতিবাদের নামে ‘দখল’ নেওয়া, বিক্ষোভকারীদের সংগঠন ধর্মীয় পতাকা উড়িয়ে দেওয়ার মতো নানা বিষয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। গোটা ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতারাও। কিন্তু সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বাংলার পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ তথা মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‌কেন্দ্রীয় সরকারের অনমনীয় মনোভাবের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।’‌ যদিও এর পরই ষড়যন্ত্রের অভিযোগও উঠতে শুরু করে। প্রশান্ত ভূষন ট্যুইটে অভিনেতা দীপ সাধু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের দুটি ছবি শেয়ার করেছেন। প্রশান্ত অভিযোগ করেছেন, পাঞ্জাবি গায়ক ও অভিনেতা দীপ সিধু লালকেল্লায় অভিযানের জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ধর্মীয় পতাকা উড়িয়ে দিয়েছিলেন সৌধে।
যদিও ফেসবুক লাইভে এসে অভিনেতা স্বীকার করেন, তিনি প্রতিবাদীদের মধ্যেই ছিলেন। তবে তেরঙ্গার অবমাননা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি বলেন, ‘‌আমি নিশান সাহিব পতাকা উত্তোলন করার পক্ষে ছিলাম ঠিকই, তবে জাতীয় পতাকা নামিয়ে আনতে কাউকে বলিনি। এমনটা যাঁরা করেছেন, তাঁরা অত্যন্ত অন্যায় করেছেন।’‌
উল্লেখ্য, নিশান সাহিবের পতাকা শিখ সম্প্রদায়ের প্রতীক। যে কোনও গুরুদ্বারে ওই পতাকা দেখা যায়। দীপ সিধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলোর দাবি, তারা কখনই দীপ সিধুকে নিজেদের দিকে ঘেঁষতে দেননি যে হেতু তাঁর মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু দু’বছর আগের লোকসভা নির্বাচনে সানি দেওল–সহ বিজেপি নেতাদের ঘনিষ্ঠ হতে দেখা গিয়েছে দীপকে। এতেই চাপ বেড়েছে বিজেপি নেতাদের ওপরেও।